আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক, থাকবে ভারত ইস্যুও

0
65

ভারতের বিরোধিতা করে বিএনপি নেতারা কয়েক দিন ধরে বিক্ষিপ্তভাবে যে বক্তব্য দিয়ে আসছেন, সে বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা হতে পারে। আজ সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকে ভারতের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
গত ২০ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
সেদিন তিনি রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নিজের ব্যবহার করা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে দিলে নেতাকর্মীরা তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর বিএনপির ভারতবিরোধিতার বিষয়টি বেশ আলোচনায় আসে। দলের নেতাদের আরো কয়েকজন ভারতবিরোধী বক্তব্য দেন। তবে রিজভীর ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিষয়ে দলের নেতাদের মধ্যে ভিন্নমতও আছে।
এ বিষয়ে দলে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে কেন রিজভী পণ্য বর্জনের ডাক দিলেন, তা নিয়ে বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। এ ছাড়া দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে চাদর ছুড়ে ফেলার বিষয়টি শোভনীয় হয়নি বলেও মনে করেন তাঁরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা উত্থাপন করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গতকাল রবিবার বিকেলে বলেন, ভারত বিষয়ে অবস্থান কী হবে, সে বিষয়ে এখনো দলীয় ফোরামে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে আজকে দলীয় ফোরামে আলোচনা হতে পারে।
তিনি এ কথাও বলেন, ‘বাংলাদেশের বিগত চারটি নির্বাচনে ভারত বাংলাদেশের একটি অবৈধ সরকার প্রতিষ্ঠায় সমর্থন ও সহযোগিতা করেছে। এতে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হয়েও ভারত বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এখন দেশের আপামর জনগণ তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে গিয়ে যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের সেই বিবেচনাবোধকে আমরা বাধা দিতে পারি না।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে দেশটির সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে চায়।
দলের নেতাদের অনেকে মনে করেন, ভারতের জনগণের সঙ্গে তাঁদের কোনো বিরোধ নেই। এ বিষয়টিও তাঁদের বক্তব্যে স্পষ্ট হওয়া উচিত।
গত শনিবার কেরানীগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই। প্রতিবেশী দেশের পরিচালকদের বিরুদ্ধে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। জনগণ পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে।’

পণ্য বর্জনের সংহতি জনগণের পক্ষে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনে তাঁরা যে সংহতি জানিয়েছেন, তা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে।
গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, একটি আওয়াজ বা স্লোগান আজ সব মহলে সমাদৃত, সেটি হলো ভারতের পণ্য বর্জন। এ দেশের মানুষ দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, অপমান, লাঞ্ছনা, ক্ষোভ থেকে এটি করছে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু সব মহলে, সব জনগণের মধ্যে এটি আজ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। সুতরাং ভারতীয় পণ্য বর্জনে তাঁরা যে সংহতি জানিয়েছেন, তা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে।
রিজভী বলেন, ভারতের নীতিনির্ধারকরা বন্ধুত্বের কথা বলেন। কিন্তু তাঁরা বাংলাদেশের অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা দেবেন না, প্রতিদিন সীমান্তে মানুষ হত্যা করবেন, একতরফা বাণিজ্য করবেন, তা হবে না। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায় না। একটি নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়। তারা বাংলাদেশে স্বৈরশাসন কায়েম করতে সমর্থন দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here