বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন। আমরা এমন এক সময়ে ইফতারের জন্য একত্রিত হয়েছি যখন দেশ আবার চলমান ফ্যাসিবাদী শাসনের কবলে পড়েছে। বিশ্ব জানে, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি যা ঘটেছিল তা কোনো নির্বাচন নয় বরং জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার জন্য তা অপমানজনক।
রোববার গুলশান হোটেল ওয়েস্টিনে এক ইফতার পূর্ব বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল করে বিএনপি। কূটনৈতিকদের সাথে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের সুশীল সমাজ, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তারাও এ ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা সংগঠিত নির্লজ্জ কারচুপি, অনিয়ম ও সহিংসতা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, ছবি, ঘটনাস্থলে ধারণ করা রিয়েল টাইম ভিডিও এবং সারাদেশের নির্বাচনী কৌশল প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়েছে এই নির্বাচনের চিত্র। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই ডামি নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, এ নির্বাচন একটি অত্যন্ত মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে প্রহসনমূলক যেখানে প্রকৃত প্রতিযোগিতার অভাব ছিল। এ কারণে এ নির্বাচন মূল আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে না। এদিকে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইসরাইলি বাহিনী কর্তৃক নিরীহ বেসামরিক জনগণের ওপর পরিচালিত অমানবিক হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসঙ্ঘকে এই গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি দুই রাষ্ট্রীয় নীতিই এর সঠিক সমাধান।
তিনি আরো বলেন, মানুষে মানুষে সম্পর্ক হলো সেই ভিত্তি যার উপর স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সংস্কৃতি, ধারণা এবং অভিজ্ঞতার আদান-প্রদানের মাধ্যমেই আমরা সীমানা অতিক্রম করতে পারি এবং শ্রদ্ধা ও সংহতির মূলে থাকা একটি বিশ্ব সম্প্রদায়কে গড়ে তুলতে পারি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কানাডার হাই কমিশনার মিসেস লিলি নিকোলস, ব্রিটিশ হাই কমিশনার মিসেস সারা কুক, আমেরিকার দ্যা চার্জ আফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, পাকিস্তান দূতাবাসের সৈয়দ আহমদ মারুফ, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদির সিম্পসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রাকস্টার, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশন ড. বিনয় জর্জ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার্জ দ্যা আফেয়ার্স ড. ব্রেন্ড স্প্যানিয়ার, চীনের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর ইয়ান হুয়ালং, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েস্বর চন্দ্র রায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
এছাড়া জাতিসঙ্ঘ, এনডিআই, আইআরআইসহ ৩৮টি দেশের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।