নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আজ যথাযথ মর্যাদা ও বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত ১৯৭১ সালে গনহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে, ইতিহাসের এই ভয়াবহ ঘটনার নথিসমূহ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এর পাশাপাশি, জাতীয়ভাবে এই নথিসমূহ স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এসময় রাষ্ট্রদূত মুহিত, ১৯৭১ সালে গনহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন কাজ করে যাচ্ছে এবং এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত মুহিত ১৯৭১ সালের গণহত্যার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ, ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোন এবং ১ কোটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার ইতিহাস উল্লেখ করে বলেন, এর সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর মাধ্যমে। তিনি আরও বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা, যার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে চিরতরে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা এবং জাতি হিসেবে আমাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া। কিন্তু হানাদার বাহিনীর সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়নি। এর বদলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত্ব আহ্বানে সাড়া দিয়ে নয় মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালি জাতি। যার পরিসমাপ্তি ঘটেছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্মের মধ্য দিয়ে।
‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণের উপস্থিতিতে দিবসটি পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দিবসটির স্মরণে একমিনিট নিরবতা পালন ও গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এর পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং শহীদদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ৭১ এর গণহত্যার উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।