নাসরুল্লাহ হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোমা ফেলেছে ইসরায়েল: মার্কিন সিনেটর

0
13

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরাল্লাহ হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েল যে বোমা ব্যবহার করে, তা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি গাইডেড অস্ত্র। ইসরায়েল ৯০০ কেজি ওজনের ‘মার্ক ৮৪’ সিরিজের এ বোমা ব্যবহার করেছে। এ কথা বলেছেন একজন মার্কিন সিনেটর। রোববার মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিসেস এয়ারল্যান্ড সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মার্ক কেলি এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই হত্যাকাণ্ডকে অসংখ্য ভুক্তভোগীর জন্য ন্যায়বিচারের একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। এসব ভুক্তভোগীর মধ্যে হাজার হাজার আমেরিকান, ইসরায়েলি ও লেবাননের বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।
বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলিতে শুক্রবার হামলায় নিহত হন হাসান নাসরুল্লাহ। তাঁকে হত্যার ইসরায়েলি দাবির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণভাবে হিজবুল্লাহ, হামাস, ইয়েমেনের হুতি ও যেকোনো ইরান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করে।
ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে মার্ক কেলি বলেন, তারা গাইডেড অস্ত্রের ব্যবহার দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে এসব অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। প্রসঙ্গত, ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে।
গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এক বছর ধরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত লড়াই চলছে। এতে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছেন উভয় দেশের লাখ লাখ মানুষ। হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা হামাসের সমর্থনে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তা থামাবে না। দুটি সংগঠনই ইরানসমর্থিত।
হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে। ইসরায়েল লেবাননে হামলা চালালে তার প্রতিক্রিয়ায় ১৯৮২ সালে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি গঠিত হয়। সেই সময় ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য বেশ কিছু লেবানিজ দল গঠিত হয়, যার একটি ছিল শিয়া মুসলিম স¤প্রদায়ের হিজবুল্লাহ। আলজাজিরা বলছে, হিজবুল্লাহ ছিল মুসলিম নেতাদের মস্তিষ্কপ্রসূত।
বর্তমানে হিজবুল্লাহকে বিশ্বের সবচেয়ে ভারী অস্ত্রধারী রাষ্ট্রবহির্ভূত সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাদের অস্ত্রাগারে আনুমানিক ১ লাখ ৩০ হাজার রকেট রয়েছে।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা অধ্যয়ন ইনস্টিটিউটের হিসাবে, হিজবুল্লাহর কাছে ১৫-২০ কিলোমিটার পাল্লার ৪০ হাজার গ্র্যাড-টাইপ মিসাইল রয়েছে। পাশাপাশি সংগঠনটির কাছে ৮০ হাজার দূরপাল্লার মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম রয়েছে, যার পরিসর ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল)। এ ছাড়া তাদের কাছে প্রায় ৩০ হাজার জেলজাল আর্টিলারি রকেট বা ফাতেহ-১১০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার পাল্লা ২০০-৩০০ কিলোমিটার। হিজবুল্লাহর অস্ত্রভান্ডারের সবচেয়ে দীর্ঘপাল্লার এই অস্ত্র দক্ষিণ ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here