মিয়ানমারে আবারও হামলা, থাইল্যান্ডে পালাল ১৩০০ মানুষ

0
78

বিদ্রোহীদের হামলায় আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে মিয়ানমার-থাই সীমান্তে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। এবার প্রাণ বাঁচাতে থাইল্যান্ডে পালাল ১৩০০ মানুষ। শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থাই কর্মকর্তারা।
স¤প্রতি বিদ্রোহীদের কারেন স¤প্রদায়ের গোষ্ঠী মিয়াবতি শেষ ফাঁড়িটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছিল। শহরটি মোই নদীর ওপর দুটি সেতুর মাধ্যমে থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত। থাই এবং মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের তিন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, শুক্রবার গভীর রাত থেকে একটি কৌশলগত সেতুর কাছে বিস্ফোরণ এবং ভারী মেশিনগানের গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন তারা। এ ঘটনার পরই থাইল্যান্ডে পালানো শুরু করেন মিয়ানমারের বাসিন্দারা। এপি।
থাই স¤প্রচারকারী এনবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা একটি পোস্টে বলেছে, জান্তা সেনাদের লক্ষ্য করে প্রতিরোধ বাহিনী ৪০ মিলিমিটার মেশিনগান ব্যবহার করেছে এবং ড্রোন ব্যবহার করে ২০টি বোমা ফেলেছে। তাদের লক্ষ্যবস্তু হওয়া জান্তা সেনারা ৫ এপ্রিল থেকে মিয়াবতি এবং সেনা পোস্টে সম্মিলিত বিদ্রোহী হামলা থেকে বাঁচতে সীমান্তবর্তী একটি সেতু ক্রসিংয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।
থাই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিয়াবতির বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষের পর শুক্রবার থেকে লোকজন পারাপার শুরু করেছেন। সেসময় শিশুসহ মধ্য বয়স্ক নারী-পুরুষদের একসঙ্গে পরিবারসহ নদী পার হতে দেখা যায়। তাদের কাছে ছিল প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, প্লাস্টিকের থলে এবং কাঁধে ব্যাগ। সীমান্তের এই অস্থিরতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার কথা বলেছেন থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন। প্রয়োজনে তার দেশ মানবিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের কোনো সংঘর্ষ থাইল্যান্ডের আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর কোনো প্রভাব ফেলুক তা আমরা দেখতে চাই না। আমাদের সীমানা এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা প্রস্তুত।’ তবে ওই পোস্টে উদ্বাস্তুদের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি তিনি। মার্চ মাসে থাইল্যান্ড সরকার প্রায় ২০,০০০ বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য মিয়ানমারে মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নিকোর্ন্দেজ বালাঙ্গুরা শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন যে, থাইল্যান্ড বর্তমানে তার সাহায্য উদ্যোগ স¤প্রসারণের জন্য কাজ করছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় তাদের। তবে সেনাবাহিনীর জন্য মিয়াবতির পতন একটি বড় ধাক্কা ছিল। এছাড়াও মিয়ানমারের একসময়ের পরাক্রমশালী সশস্ত্র বাহিনী গত অক্টোবর থেকে একের পর এক পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে। সীমান্ত চৌকিসহ হারিয়েছে বেশ কিছু অঞ্চল। এদিকে মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে জাতিসংঘ। শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক এক বিবৃতি বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও আরকান আর্মির (এএ) পাশাপাশি রোহিঙ্গা ও জাতিগত রাখাইন স¤প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here