রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে শ্বাসকষ্টের রোগীদের রোজা রাখতে কোনো বাধা নেই। ইনহেলার শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা রোগী শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে টেনে নেয় এবং ওষুধ শ্বাসনালিতে পৌঁছায়। অনেকে মনে করেন, ইনহেলার হাঁপানির সর্বশেষ চিকিৎসা। ইনহেলার একবার ব্যবহার করলে পরে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ কমানোর জন্য আর অন্য কোনো ওষুধ কাজে আসে না। তাদের জেনে রাখা ভালো, শ্বাসকষ্টের প্রথম চিকিৎসাই হচ্ছে ইনহেলার, শেষ চিকিৎসা নয়।
এখন অবশ্য অনেক ডিভাইস পাওয়া যায়। তা ব্যবহার করে হাঁপানি রোগী রোজা রাখতে পারেন। সালবিউটামল ইনহেলার ইফতারের সময় দুই পাফ, সেহরির সময় দুই পাফ নিতে পারেন। এটা নিলে লম্বা সময় ধরে ভালো থাকা যায়।
রোজা রাখা অবস্থায় কেউ যদি ইনহেলার নেয়, তবে রোজা ভাঙবে না। কারণ ইনহেলার খাদ্যের পরিপূরক নয়। ইসলামিক স্কলাররা এ বিষয়ে স্পষ্ট বলেছেন, এটা সহজেই রোজা রেখে নেওয়া যাবে। তারপরও যদি কেউ না নিতে চান তবে সেহরি এবং ইফতারের সময় দুই পাফ করে নিতে হবে। এখন বিভিন্ন জেনথিন গ্রæপের ওষুধ আছে, যেমন-ইউনিকনটেন, কনটেন (একটা ২০০ মিলিগ্রামের ওষুধ), ইফতার করে একটা, সেহেরির পর একটা খাওয়া যায়। তাহলে পুরো সময়টাই শ্বাসকষ্ট মুক্ত থাকা যায়। রাতে শোয়ার সময় মন্টিলুকাস ১০ মিলিগ্রাম ওষুধ খেলে খুব সহজেই রোজা রাখা যায়।
কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো অ্যালার্জিতে ভরা। যেমন-গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ। অনেক হাঁপানি রোগী আছেন, যাদের এসবের প্রতি অ্যালার্জি আছে। এগুলো তাকে এড়িয়ে চলতে হবে। শ্বাসকষ্টের রোগী যদি খুব পেট ভরে খায়, তবে দম নিতে সমস্যা হয়। সুস্থভাবে রোজা যেন রাখতে পারেন, সে জন্য কিছু নিয়মকানুন অবশ্যই মেনে চলতে হবে। মূল লক্ষ্য, সব কিছুর মধ্যে ভারসাম্য করে চলতে হবে, পরিমিতি বোধ থাকতে হবে। রোজা পরিমিতি বোধের শিক্ষা দেয়। সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।
লেখক :অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., শ্যামলী, ঢাকা।