৬৪ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬০ সালে মুক্তি পেয়েছিল মোগল-ই-আজম সিনেমা। বলিউডের ইতিহাসে এই সিনেমার সংলাপ, গান ও সেট আজও অতুলনীয়। অনেক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞের মতে, মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করলে ‘মোগল-ই-আজম’ হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে আজও সর্বকালের সবচেয়ে বেশি আয় করা সিনেমা হিসেবে জায়গা ধরে রেখেছে।
শাহজাদা সেলিমের বিদ্রোহ ও অনারকলির অতুলনীয় সৌন্দর্য ইতিহাসের পাতায় চলচ্চিত্রটি পাকাপোক্ত জায়গা করে নেয়। এটি তখনকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভারতীয় সিনেমা। এ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন পৃথ্বীরাজ কাপুর, দিলীপ কুমার, মধুবালা ও দুর্গা খোটে।
এই মোগল-ই-আজম সিনেমার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘পিয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া’। আজও বিন্দুমাত্র ফিকে হয়নি মাস্টারপিস এ গানের আবেদন। এই গানটি সৃষ্টি হওয়ার পেছনের বেশ মজার ঘটনা রয়েছে ।
মোহন স্টুডিওতে ‘পিয়ার কিয়া তো ডরনা কিয়া’ গানের চিত্রায়ণ হয়েছিল। লাহোর দুর্গের শীশ মহলের অনুকরণে গানের সেট তৈরি করা হয়েছিল। বিশাল ওই সেটের দৈর্ঘ্য ছিল ১৫০ ফুট, প্রস্থ ৮০ ফুট ও উচ্চতা ৩৫ ফুট।
দুই বছর এই গানের সেট তৈরি করতে সময় লেগেছিল। আর গানের জন্য খরচ হয়েছিল ১ কোটির রুপির বেশি। ওই সময় এর থেকে কম খরচে একটা হিন্দি সিনেমা বানানো যেত।
ছবির পরিচালক ও সুরকার এ গান নিয়ে এতটাই সিরিয়াস ছিলেন যে বহুবার সম্পাদনার পর গানটি চূড়ান্ত রূপ পায়। গীতিকার শাকিল বাদায়ুনি প্রায় ১০৫ বার কাটাছেঁড়া করার পর অবশেষে লিরিক পছন্দ হয় সুরকার নওশাদের। কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকরকে আইকনিক গানটি গাওয়ার জন্য বেছে নেন নওশাদ। নওশাদ গানটিতে ‘ইকো ইফেক্ট’ চাইছিলেন। কিন্তু ওই সময় পোস্ট-প্রোডাকশনে ইকো যোগ করার মতো পর্যাপ্ত সাউন্ড ইফেক্ট ছিল না।
অবশ্য পরে সুরকার নওশাদ একটি বুদ্ধি বের করেন। লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে স্টুডিওর বাথরুমে গানটি গাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন তিনি, যাতে প্রতিধ্বনি তৈরি হয়।
সবার এই পরিশ্রম বৃথা যায়নি। মুক্তির পর ‘মোগল-ই-আজম’ ব্লকবাস্টার হয় আর দর্শকহৃদয়ে স্থান করে নেয় চিরদিনের জন্য।