ইরানে গত শুক্রবার চালানো ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলাকে ছোট করে দেখিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, ‘হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো ছিল আমাদের শিশুদের খেলনার মতো। ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়, তাহলে প্রতিক্রিয়াও হবে তাৎক্ষণিক ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের।’
মার্কিন টিভি ও বেতার নেটওয়ার্ক এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান ওপরের সতর্কতা উচ্চারণ করেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, গত শুক্রবার ভোররাতে ইরানে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
তাঁরা বলেছেন, ইরানের ইস্পাহানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রের সুরক্ষায় মোতায়েন রাডার সিস্টেমকে লক্ষ্যবস্তু বানায় তেল আবিব। কিন্তু ইরানের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা বলছেন ক্ষেপণাস্ত্র নয়, বরং কয়েকটি অনুপ্রবেশকারী ড্রোনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে তাঁদের বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলার ভবনে ইসরায়েলি হামলায় তেহরানের কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। জবাবে গত ১৪ এপ্রিল ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান।
ইসরায়েল ‘সময়মতো’ এর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। পাঁচ দিন পর দৃশ্যত সীমিত আকারে পাল্টা হামলা করল তারা। তবে এ হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার।
ইসরায়েলের হামলায় কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তা অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছে বিবিসি।
এসংক্রান্ত একটি ধ্বংসাবশেষের ছবি বিশ্লেষণ করে অস্ত্রটি শনাক্তের চেষ্টা করেছে বিবিসি। তাদের সঙ্গে কথা বলা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, হামলায় দ্বিস্তরের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সীমান্তের ওপারে ইরাকের মাটিতে পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষকে অনেকে ইসরায়েলে নির্মিত ‘বøু স্প্যারো’ ক্ষেপণাস্ত্রের বলে অনুমান করছেন।
ইরাকে ইরানপন্থীদের ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ
এদিকে ইরাকে স্থাপিত ইরানপন্থী মিলিশিয়া গোষ্ঠী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেসের (পিএমএফ) ঘাঁটিতে এক বিস্ফোরণে একজন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছে। তবে কোনো পক্ষ এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি।
পিএমএফ জানিয়েছে, গত শুক্রবার মধ্যরাতে কালসু সামরিক ঘাঁটিতে এই হামলা চালানো হয়। এর অবস্থান রাজধানী বাগদাদ থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের বাবিল প্রদেশে।
ঘটনাস্থলের এক ভিডিওতে বড় ধরনের বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা গেছে। আশপাশের এলাকাগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। গতকাল সকালে ঘটনাস্থলে বড় ধরনের গর্ত এবং অবকাঠামোর বিধ্বংসী চিত্র দেখা গেছে।
এক বিবৃতিতে পিএমএফ দাবি করেছে, কালসু সামরিক ঘাঁটিতে বোমা হামলা করেছে মার্কিন বাহিনী। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ইরাকের সামরিক বাহিনী অবশ্য দাবি করেছে, বিস্ফোরণের সময় বা আগে বাবিল এলাকার আকাশসীমায় কোনো ধরনের বিদেশি ড্রোন বা যুদ্ধবিমানের অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা