নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির বাসভবন ক্রয়ে অনিয়ম হয়নি? তদন্ত হোক।

0
84

বাংলাদেশ কনস্যুলেট-এ অহরহ প্রবাসীদের হয়রানি, কূটনৈতিকদের অশোভন আচরণ চরমে, দায়িত্ব পালনে স্বৈরাচারী মনোভাব!
অনিন্দ্য ইসলাম : মাঝে মধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিউইর্য়কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের বিভিন্ন অনিয়ম ও হয়রানি খবর শিরোনাম হয়। প্রতিকার হয় না, সংশোধনের বালাই নেই। কূটনৈতিকরা অশোভন আচরণ করছে, দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে এমন গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায়।
প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রেরণ করে। জানা যায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সই দেশে ব্যাংকগুলিতে বৈদেশিক মুদ্রার ভাÐারে প্রধান যোগানদার। সরকার ও কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের বিদেশে দেশের এ্যামবেসড বলে আখ্যায়িত করলেও কার্যত প্রবাসীরা কূটনৈতিক মিশন গুলিতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও নাজেহালের শিকার হচ্ছে। প্রবাসীরা ন্যূনতম কাজটুকু করতে গিয়ে সম্মুখীন হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, নানান নিয়ম-আইন-কানুনের অজুহাতে হয়রানি, এমনকি স্ত্রী সন্তানের সামনে অপমানিত হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যায়।
নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সেবার মান সর্বনিম্ন পর্যায়ে ঠেকেছে। কর্মকর্তাদের দাপটে গ্রাহক সেবায় প্রবাসীরা আতঙ্কিত। সূত্রমতে সম্প্রতি একজন প্রবাসী তার স্ত্রী-পুত্র-কন্যার সামনেই অপমানিত হয়েছেন। জানা যায় জনৈক কনস্যুলেট কর্মকর্তা একজন প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। বেচারা প্রবাসী পরিবারের সবার সামনেই বিব্রত বোধ করেন। এমনকি তিনি প্রতিবাদও করেন। শুরু হয় হট্টগোল। কনস্যুলেটে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা কাম্য নয় তবু দিনের পর দিন এসব চলছে।
কূটনৈতিক সিন্ডিকেটের দাপটে অসহায় প্রবাসীদের কোন অভিযোগে কাজ হয়নি। বরং প্রচন্ড দাপটের সাথে কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত সেবার নামে প্রবাসীদের হয়রানি করছে বলে খবর পাওয়া যায়।
কনস্যুলেটের প্রধান কনসাল জেনারেল সাহেব এসব খবর রাখেন কী? কনসাল জেনারেল এই কমিউনিটিতে ফিতা কেটে, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে চষে বেড়ান। জন্মদিনে প্রবাসীদের বাসাবাড়ী থেকে পথমেলায় কনসাল জেনারেলের পদচারণা!
অন্য একটি সূত্র জানায়, কনস্যুলেটে অধিকাংশ কর্মকর্তা অলস সময় কাটান, কেউ কেউ নির্দিষ্ট অফিস সময়ের অনেক পরে হেলেদুলে অফিসে উপস্থিত হন। দুপুরে একটিপ ঘুমিয়েও নেয় তারা। এদিকে সেবা প্রত্যাশী প্রবাসীরা অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে ঝিমিয়ে যায়। এসব কি কনসাল জেনারেল বা ভাইস কনসাল জেনারেলের দৃষ্টিতে পড়ে না। রেমিটেন্স প্রেরণকারী প্রবাসীরা এমনভাবেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
জানা যায় নিউইয়র্ক সহ আমেরিকার অন্যান্য শহরে অবস্থিত কনস্যুলেটগুলি সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস। বিশেষ করে নিউইয়র্ক কনস্যুলেট আয়ে সর্বোচ্চ।
ওয়াকিবহাল সূত্রের দাবি, কনস্যুলেট মিশন ও দূতাবাস থেকে আয়ের ডলার ব্যাপকভাবে বেহিসেবী খরচ ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। কূটনৈতিক মিশনে প্রবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাৎ করছে কতিপয় ব্যক্তি বিশেষ। দায়িত্ব প্রাপ্তরা এসব অভিযোগ এড়িয়ে যেতে পারে না। এসব রিপোর্টের পুরোপুরি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
এদিকে আরও জানা যায়, কনস্যুলেট, মিশন বা দূতাবাস সরকারি অর্থের ব্যাপক অপচয় করছে। কারণে অকারণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অজুহাতে কমিউনিটির মুখচেনা কতিপয় ব্যক্তিদের দাওয়াত দিয়ে ভূরিভোজন সহ ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান করছে। সরকারি খাতায় হিসেব হয়তো নয়ছয় করে দ্বিগুণ তিনগুণ করা হচ্ছে। এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখতে হবে।
নিউইয়র্ক কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেলের কাছে প্রবাসীরা আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করে। কেবল কমিউনিটিতে ফিতা কেটে বেড়ানো শুধু কনসাল জেনারেলের কাজ হতে পারে না।
নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কমিউনিটি একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী নিয়ে। প্রবাসীদের সেবার মান উন্নত করা প্রয়োজন। সরকারকে এ বিষয়ে তদন্তে নামতে হবে।
জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ডা. এ কে আব্দুল মোমেন এর আমলে নিউইয়র্কে ম্যানহাটনে রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ক্রয়ে অনিয়ম হয়নি? তদন্তহোক।
জন্মভূমি প্রতিবেদক : ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ডলারের হরিলুট এ সপ্তাহের আলোচিত খবর। ওয়াশিংটনের পুকুর চুরির তদন্ত হয়নি বরং ফাইল গায়েব!
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধির জন্য ম্যানহাটনের মিড টাউনে ক্রয় করা হয়েছে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। সূত্রমতে নয়ছয় হয়েছে ইচ্ছামত। রিয়েল স্টেট ব্রোকারের কমিশন, স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তাদের লেনদেন ও কমিশন, ফ্ল্যাটের সৌন্দর্য্য বধনে মেরামত ও পুন;সংস্কারে বিপুল অর্থের দুর্নীতির মচ্ছব হয়েছে বলে জানা যায়। ফ্ল্যাট ক্রয়ের পর ব্রæকলিনের একটি বাংলাদেশী কন্সট্রাকশন-এর স্বত্বাধিকারীর সাথে রাষ্ট্রদূত ড.এ কে আব্দুল মোমেন-এর বিশেষ সম্পর্কের খবর মিলেছে।
উল্লেখ্য তখন জাতিসংঘের প্রতিনিধি স্থায়ী ছিলেন ডা. একে আব্দুল মোমেন। ওয়াশিংটনের দূতাবাসে মিলিয়ন ডলার চুরি ও ফাইল গয়েব সম্পর্কিত অভিযোগের সময়ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ড.এ কে আব্দুল মোমেন। পরপর দুটি ঘটনার সাথে যোগসূত্র আছে। দুদক (দুর্নীতি দমন ব্যরো) যদি এই তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে ড.এ কে আব্দুল মোমেনকে তলব করে তবেই এই রহস্য উন্মোচন হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here