মস্কো ডেস্কঃ রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় কনসার্ট হলে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজন চারজনই বিদেশি নাগরিক বলে দাবি করেছে রুশ প্রশাসন।
ক্রেমলিনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবারের ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস। রাশিয়ায় বিগত ২০ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা। কিন্তু ক্রেমলিন এ ঘটনার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে।
যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
শনিবার ক্রেমলিনের জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এফএসবি নিরাপত্তা পরিষেবার প্রধান আলেকজান্ডার বোর্টনিকভ অবহিত করেছেন যে, আটক সন্দেহভাজনদের মধ্যে ‘চার সন্ত্রাসী’ রয়েছে।
অপরদিকে রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মস্কোর কাছের একটি কনসার্ট হলে শুক্রবারের হামলায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার চারজনের কেউ রাশিয়ার নাগরিক নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গ্রেফতার চারজনের সবাই বিদেশি নাগরিক।’
এর আগে রাশিয়ার আইনপ্রণেতা আলেকসান্দার কাইনেস্তিন জানিয়েছিলেন, হামলাকারীরা একটি রেনো গাড়িতে করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, পরে শুক্রবার রাতে মস্কো থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে ব্রাইয়ানস্ক অঞ্চলে গাড়িটিকে দেখতে পায় পুলিশ। তাদের থামার সঙ্কেত দিলে তা না মেনে এগিয়ে যায় তারা।
গাড়ি নিয়ে তাদের পিছু ধাওয়া করে দুইজনকে আটক ও গ্রেফতার করে পুলিশ। আরও দুইজন পাশের বনে পালিয়ে যায়। পরে তাদেরও আটক করা হয় বলে জানায় ক্রেমলিন।
গাড়িটিতে তাজিকিস্তানের কয়েকটি পাসপোর্ট, পিস্তল ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে। মধ্য এশিয়ার মুসলিম প্রধান দেশ তাজিকিস্তান আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
এদিকে মস্কোর হামলায় দায় স্বীকার করার পর এবার প্রমাণ হিসেবে চার হামলাকারীর মুখোশ পরা ছবি প্রকাশ করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট। হামলার পরপরই দায় স্বীকার করে নিজেদের মুখপত্র ‘আমাক’ থেকে টেলিগ্রামে একটি পোস্ট দেয় আইএস। পরদিন শনিবার দেওয়া আরেক পোস্টে সন্দেহভাজন চার হামলাকারীর একটি ছবি প্রকাশ করে আইএস।
সেখানে লেখা হয়েছে, ‘ইসলামিক স্টেট এবং ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইরত দেশগুলির মধ্যে তুমুল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই হামলাটি হয়েছে।’
তবে আইএস দায় স্বীকার করলেও রাশিয়া এ হামলার পেছনে ইউক্রেনের যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছে।