রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গতকাল সাক্ষাৎ করেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক। সাক্ষাৎকালে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়া ভিসা কেন্দ্র ফিরিয়ে আনা এবং অনিয়মিত অভিবাসন রোধে আলোচনা করেন টনি বার্ক। তিনি বলেন, অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ে তাঁর সরকার আলোচনা শুরু করতে চায়।
এ সময় ড. ইউনূস অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত অভিবাসন বাড়ানোর আহ্ববান জানান। জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাঁরা বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত অভিবাসন বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশ পুনর্গঠনের কাজটি অনেক বড়। কারণ স্বৈরাচারী শাসন সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে এবং অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। প্রত্যাশা মোকাবিলা করা সবচেয়ে কঠিন অংশ। কিন্তু মানুষ ধৈর্যশীল। আমাদের আবার কাঠামো তৈরি করতে হবে।
মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বিদায়ি সাক্ষাৎ : অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ি সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে তাদের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠককালে একজন শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে লাফেভের দায়িত্ব পালন ও সেবার প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক এগিয়ে নিতে তার আন্তরিক প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন তিনি। জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থী-নেতৃত্বাধীন গণ অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণা করে হেলেন লাফেভ বলেন, ‘আমি ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরে খুব গর্বিত’। সাক্ষাৎকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøঙ্কেনের একটি চিঠি অধ্যাপক ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করে হেলেন লাফেভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ ক্যাম্প থেকে উত্তর আমেরিকার দেশে পুনর্বাসন ত্বরান্বিত করছে। বৈঠকে আলোচনার এজেন্ডাভুক্ত ছিল বিচারিক সংস্কার, দক্ষিণ এশীয় বিদ্যুৎ সংযোগ, সন্ত্রাস প্রতিরোধ, স্বৈরাচারী সরকার আমলে বাংলাদেশ থেকে চুরি হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার দেশে ফেরানোর প্রচেষ্টা, বেসামরিক আমলাতন্ত্রের সংস্কার এবং শ্রম সমস্যাসহ আরও বিভিন্ন বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে পরামর্শ ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে অর্থ উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করছে জানিয়ে লাফেভ বলেন, ‘চুরি করা টাকা ফেরত দেওয়া কঠিন, কিন্তু এটা অসম্ভব নয়’। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এটি করব’। এ ছাড়া অন্তর্র্বতী সরকার বড় আকারে শ্রম সংস্কার করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা ঢাকা সফর করবেন বলেও জানিয়েছেন হেলেন লাফেভ।