দেশের গান ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’-সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের গীতিকার, সুরকার, ইসলামি চিন্তাবিদ, লেখক, অনুবাদক আবু জাফর ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
লোক-গবেষকসাইমন জাকারিয়া এই গীতিকারের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন।
তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি এক মেয়ে ও তিন ছেলে রেখে গেছেন। বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন তার সাবেক স্ত্রী।
সুরকারের লাশ নেয়া হচ্ছে তার জন্মস্থান কুষ্টিয়ায়। শুক্রবার আসরের নামাজের পর কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা হবে।
আবু জাফর রচিত অনন্য সংগীতের মধ্যে রয়েছে ‘তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে’, ‘আমি হেলেন কিংবা মমতাজকে দেখিনি’, ‘তুমি রাত আমি রাতজাগা পাখি’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তার রচিত সব গানের বাণীতে অসামান্য সুর সংযোজনও করেন তিনি। শুধু তাই না, নিজের রচিত ও সুর সংযোজিত বেশিভাগ গানে কণ্ঠও দিয়েছেন তিনি।
আবু জাফর ছিলেন একাধারে একজন গীতিকার, সুরকার, কবি এবং সংগীতশিল্পী। পেশাগতজীবনে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। চুয়াডাঙ্গা কলেজ ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
রাজশাহী-ঢাকা বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ছিলেন আবু জাফর। তার রচিত দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানগুলো তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ আবু জাফরের সৃষ্টি। এই গান তাকে নিয়ে গিয়েছিল অনন্য উচ্চতায়। গানটি বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি গানের মধ্যে স্থান করে নিয়েছিল।
তবে জীবনের একটি পর্যায়ে এসে ইসলামি ভাবধারা অনুসরণ করতে থাকেন। ইসলামবিষয়ক বেশ কয়েকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বইও তিনি রচনা করেন।