কঙ্গনার ‘ইমার্জেন্সি’ ছবি বাংলাদেশের পর কোথায় নিষিদ্ধ

0
6

বহু কাঠখড় পুড়িয়ে বাধাবিঘ্ন দূর করে অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ছবি ‘ইমার্জেন্সি’। শুক্রবার ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। আর ‘ইমার্জেন্সি’ ছবিটি নিজেই পরিচালনা, চিত্রনাট্য ও প্রযোজনা করেছেন অভিনেত্রী। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রেও অভিনয় করেছেন কঙ্গনা রানাউত। এদিকে ‘ইমার্জেন্সি’ মুক্তির আগেই বাংলাদেশে প্রদর্শনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবার ছবিটি প্রদর্শনের নিষিদ্ধ ঘোষণা এসেছে এসজিপিসির পক্ষ থেকে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভাগবত মানের কাছে ‘ইমার্জেন্সি’র ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির অনুরোধ জানিয়েছে এসজিপিসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে একটি পোস্টও শেয়ার করে নিয়েছে এসজিপিসি।
এসজিপিসির সভাপতি চিঠি লিখে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ রেখেছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ছবি ‘ইমার্জেন্সি’র ওপর শিরোমণি গুরুদ্বার পরবান্ধক কমিটির আপত্তি রয়েছে। ছবিতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে এবং এই ছবি শিখ সমপ্রদায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এসজিপিসির পক্ষ থেকে পাঞ্জাবে এ ছবির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার দাবি করা হয়েছে।
সেই পোস্টে আরও লেখা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি মারফত জানানো হয়েছেÑ ছবিটি মুক্তি পেলে শিখ স¤প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়াবে। তাই রাজ্যে এ ছবিকে নিষিদ্ধ করা সরকারের দায়িত্ব। এ ছবি মুক্তি পেলে শিরোমণি সমপ্রদায় তীব্র বিরোধিতা করবে।
এর আগে ‘ইমার্জেন্সি’ নিষিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশেও। ইন্দিরা গান্ধীর সময় ১৯৭৫ সালে ভারতে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল, যা রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল ভারতকে। এ ছবিটিতে ভারতের রাজনীতি ও সমাজনীতির একটা অন্ধকার দিক ফুটে উঠেছে। এ ছাড়া ছবিতে দেখানো হয়েছে ইন্দিরা গান্ধী কীভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছিল। সেই সময় পাকিস্তান-বাংলাদেশের যুদ্ধে যাতে ভারত না জড়িয়ে পড়ে, তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রমাগত চাপ আসছিল, কিন্তু ইন্দিরা গান্ধী তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, লাখ লাখ শরণার্থীকে ভারতে জায়গা দেওয়ার থেকে অর্থনৈতিক স্তরে ভারতের পক্ষে সরাসরি পাকিস্তানের মোকাবিলা করা ভালো।
এদিকে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তাল বাংলাদেশ। এখনো যে অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে তা বলা যায় না। তা ছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাও দেখা দিয়েছিল। তাই সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ছবিটির মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।
একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ‘বাংলাদেশে ‘ইমার্জেন্সি’ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের সঙ্গেও জড়িত। তাই ছবিটি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি কর হয়েছে। অনেকের মতে, ‘ইমার্জেন্সি’র অনেক বিষয়বস্তু দুই দেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক সমস্যার নানা দিককে প্রভাবিত করবে।’ এ সময় দুই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই নাকি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বতীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্ত।
এর আগে ‘ইমার্জেন্সি’ ছবি মুক্তির আগে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী-প্রয়োজক কঙ্গনা রানাউত। আবার সেই প্রদর্শনী দেখানো হয় নাগপুরে। অভিনেত্রী এ ছবিটি দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়িকে। ছবিটি দেখার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মন্ত্রী লিখেছিলেনÑ ভারতের ইতিহাসের কালো অধ্যায়কে সততার সঙ্গে উৎকৃষ্টভাবে উপস্থাপন করার জন্য মন থেকে পরিচালক এবং ছবির সব অভিনেতাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় তুলে ধরা হয়েছে এ ছবিতে। সবাইকে এ ছবি দেখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ‘ইমার্জেন্সি’ ছবি নিয়ে বেশ কিছু আপত্তি জানিয়েছিল শিরোমণি অকালি দল। যার ফলে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেতে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয় তাকে। ছবিটি থেকে বেশ কিছু দৃশ্য বাদও দিতে হয়েছে অভিনেত্রীকে। সব মিলিয়ে প্রথম পরিচালনা করতে গিয়ে ভালোই বেগ পেতে হয়েছে কঙ্গনাকে। তাই আগামী দিনে আর রাজনৈতিক কোনো ছবি নির্মাণ করবেন না বলে জানিয়েছে অভিনেত্রী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here