গে কানেকশন! স্থপতি ইমতিয়াজ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন

0
123

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া (৪৭) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন মিল্লাত হোসেন মুন্না ওরফে মুন (১৯), এহসান ওরফে মেঘ (২৩) ও আনোয়ার হোসেন (৩৮)।

ডিবি তেজগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এনামুল হক মিঠু বাসসকে জানান, গ্রেফতারকৃতরা সমকামী ও তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য। তারা একটি গে চ্যাটিং অ্যাপসের মাধ্যমে আগে থেকে সমকামী বিভিন্ন লোকজনকে টার্গেট করে রুম ডেটের কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে আসেন। এভাবে বিভিন্ন কৌশলে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা-পয়সা হাতিয়ে আসছেন তারা।

নিহত ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার সঙ্গে আসামি আলিফের গে চ্যাটিং অ্যাপসের মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি হয়। তারই সূত্র ধরে গত ৭ মার্চ দুপুরে আলিফকে ফোন করেন ইমতিয়াজ। আলিফ তাকে কলাবাগান থানার ক্রিসেন্ট রোডের আরাফাতের বাসায় যেতে বলেন।

ওই বাসার একটি রুমে ইমতিয়াজ ও আলিফ আপত্তিকর অবস্থায় থাকাকালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আলিফের সহযোগী আরাফাত, মেঘ, মুন্না ও আনোয়ার প্রবেশ করেন। তারা ওই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইমতিয়াজকে মারধর শুরু করে এবং তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন।

এডিসি এনামুল হক মিঠু আরও বলেন, ইমতিয়াজ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার বুকে, পিঠে বেদম মারধর করেন আসামিরা। পরে ইমতিয়াজের মৃত্যু হয়। আসামিরা কৌশলে বাসা থেকে ইমতিয়াজের মরদেহ বের করে একটি প্রাইভেটকারে করে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকার কামারকান্দা গ্রামের নবাবগঞ্জ হাইওয়ে রোডের পাশে ঝোপে ফেলে দেয়। পরে আলিফকে বাসাবো, আনোয়ারকে গ্রিনরোড নামিয়ে দিয়ে আরাফাত, মেঘ ও মুন্না নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও কুমিল্লা হয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যান।

ডিবি তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) গোলাম সবুর বলেন, ভারতে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালায় দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে আসামিরা ওই স্থান থেকে পালিয়ে পুনরায় অবৈধভাবে একই পথে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপর ডিবি পুলিশের অভিযানে ইমতিয়াজ হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ডিবির তেজগাঁও বিভাগের নেতৃত্বে টানা অপারেশনে মেঘ, আনোয়ার ও মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার একটি গ্যারেজ থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। তবে আরাফত আর আলিফ ভারতে পালিয়ে গেছেন ।

ইমতিয়াজ তেজগাঁও এলাকায় নিজ ফ্ল্যাটে থাকতেন। গত ৭ মার্চ কলাবাগান ক্রিসেন্ট রোড এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ইমতিয়াজ। পরদিন তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরদিন সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের চিত্রকোট কামারকান্দা সেতু এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৯ মার্চ পুলিশ লাশ আঞ্জুমান মুফিদুলে হস্তান্তর করে। এরপর বেওয়ারিশ হিসেবে মুন্সিগঞ্জ পৌর এলাকার কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে কবর থেকে তোলার পর তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার ও স্বজনেরা ইমতিয়াজের লাশ শনাক্ত করেন।
সূত্র : বাসস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here