জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি এ এস এম রহমত উল্লাহ ভূঁইয়া ও জাগপা যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক নোমান সিদ্দিকী এবং জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম- বাংলাদেশ ( জেএসএফ )র পক্ষে হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন আন্তর্জাতিক মিডিয়া সেল থেকে প্রেরিত যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন,সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ নাম ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে।সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এই কমিশনের প্রধান হিসেবে তার পরিবর্তে আলী রীয়াজের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা এই নিয়োগের তীব্র বিরোধিতা ও নিন্দা জানাচ্ছি। জনতার সাথে যারা বিপ্লবে সরাসরি জড়িত ছিল এবং যারা পতিত স্বৈরাচারের নির্যাতনে নির্যাতিত হয়েছেন , তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া হলে ৫ আগস্টের ছাত্র জনতার বিপ্লবের সত্যিকারের স্বাধীনতা আসবে। নতুবা আবারো সেই ৭১ এর পরবতী সময়ের মতো সুবিধাবাদীদের পদানত হবে দেশ , জাতি ও সংবিধান।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজকে নিয়োগ দেয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- (জাগপা) যুক্তরাষ্ট্র শাখা ও জাতীয় সমুন্নত ফোরাম বাংলাদেশ ( জেএসএফ )।খবর বাপসনিউজ ।
সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে , কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে দিয়ে লাখ লাখ মানুষের রক্তে ভেজা একটি দেশের সংবিধান সংস্কার হতে পারে না। ছাত্র জনতার বিপ্লবের ফসল কি আবারো মুখ থুবড়ে পড়বে ? বিতর্কিত লোকদের দিয়ে কিসের সংস্কার ? কাপড় পাল্টালে মানুষ বদল হয় না। বাংলাদেশে কি আর কেউ নেই ?আসুন এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। সম্পূর্ণ দল নিরপেক্ষ এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ বিশ্বাসী জ্ঞানী ব্যক্তিদের দিয়ে সংবিধান সংস্কার করতে হবে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে যাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে , তিনি কোন সংবিধান বিশেষজ্ঞ নন। আলী রীয়াজ জাসদ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের নেতা।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে , ছাত্র জনতার বিপ্লবের সময় তার লেখা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় তিনি সেই সময় লেখার মারপ্যাচে পতিত স্বৈরাচারের পক্ষেই ছিলেন। কারণ তিনি দৃঢ়তার সাথে কখনো ছাত্রজনতার আন্দোলনকে সমর্থন দেন নাই।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে , পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা এখনো সক্রিয় এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন নাম দিয়ে নিয়োগের আগে বিতর্কিতদের এখনই বাদ দিতে হবে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজের নাম ঘোষণার পর আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে ধরি মাছ না ছুঁই পানি এই লেভেলের লোকগুলো দেশ পুনর্গঠনে নিয়োগ দেয়া বিস্ময়কর।
জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম-বাংলাদেশ ( জেএসএফ ) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) প্রেরিত বিবৃতিতে বলা হয় , শেখ হাসিনার আমলে ভারত বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিল। এখন তাদের আধিপত্য ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত যে কোন সময় ‘দাঙ্গা’ লাগিয়ে দিতে পারে। তাই সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ছাত্র জনতা ও অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পুনর্গঠনে সম্পূর্ণ একাত্বতা ঘোষণা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে , আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পুনর্গঠনে হাত দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র তার পাশে রয়েছে। এই সুযোগে এলিট শ্রেণি (সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, এনজিও ব্যাক্তিত্ব) কিছু ব্যাক্তি ড. ইউনূসের ওপর ভর করে দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তারা কী দিল্লির নীল নকশা অনুযায়ী বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে সংস্কার করবেন?
বিবৃতিতে জনতার উদ্দেশে বলা হয়েছে , নতুন লেবাসে পুরোনো কমিউনিস্ট, আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতাদের দিয়ে ৫ আগস্টের বিল্পব ডাকাতি করা হচ্ছে । এই বহুল বিতর্কিত লোকটি কিসের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান। আমরা মানি না , পুরোনো মাল নতুন লেবেলে। জাতিকে সজাগ হতে হবে।আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই। যেখানে শএুর চোখের সামনে বারুদের মত জ্বলে উঠবে।স্বাধীন বাংলাদেশ।
জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম-বাংলাদেশ ( জেএসএফ ) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) প্রেরিত বিবৃতিতে বলা হয় ,সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের উদ্যোগ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কিন্তু বাংলাদেশপন্থী বিশেষজ্ঞ মেধাবীদের দায়িত্ব দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু আলী রীয়াজের চেতনায় আওয়ামী লীগ ও পক্ষপাতে ভারতপ্রীতি রয়েছে। কমিশন জাতিকে উপহার দিতে পারবেন? নাকি দুর্নীতি দমন কমিশনে সংস্কারের নামে কৌশলে দিল্লির নীল নকশার কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি করবেন? এ শঙ্কা দেশের ছাত্র জনতার মধ্যে রয়ে গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিতর্ক চলছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয় , আগে যেমন বলা হতো ৬ জন বিশিষ্ট ব্যাক্তিকে সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে বিশিষ্টজন হতে তিনটি গুন থাকা অপরিহার্য। প্রথমত বিশিষ্টজন হতে হলে তাকে ভারতপন্থী হতে হবে, দ্বিতীয়ত ইসলাম বিদ্বেষী হতে হবে এবং তৃতীয়ত ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি ইংরেজি ও একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকার চেতনা ধারণ করতে হবে। বর্তমান সরকার যাদের নিয়োগ দিচ্ছে তাদের বেশির ভাগই এই শ্রেণির বিশিষ্টজন হিসেবে চিহ্নিত।’ এই মাফিয়াচক্র দেশকে সম্পূর্ণ ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। দেশকে আমদানিনির্ভর ও পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। মাফিয়াচক্র দেশের ব্যাংকগুলো পর্যন্ত দেউলিয়া করে দিয়েছে।
জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম-বাংলাদেশ ( জেএসএফ ) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) প্রেরিত বিবৃতিতে বলা হয় , শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনালে শেখ হাসিনার সঙ্গে বিরোধ নাটক করলেও সব সময় দিল্লির তল্পীবাহকের ভুমিকা পালন করেছে, এখনো পরিবর্তন হয়নি। ‘বিএনপি ঠেকাও’ ধোঁয়া তুলে ১৬ বছরে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনাকে মনস্টার বানিয়েছে। ৮ আগস্ট ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতের চেতনাধারী ওই গণমাধ্যম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে নিজেদের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয় , শেখ হাসিনার নানামুখি ষড়যন্ত্র, ভারতের চানক্যনীতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে বশীকরণের চেষ্টার মধ্যেই ড. ইউনূস দেশ পুনর্গঠনের কাজে হাত দিয়েছেন। নিরহংকার নির্লোভ ড. ইউনূস একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করছেন।দেশ জাতির এই মুহূর্তে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে কোন সংস্কার হবে না উল্টো পতিত স্বৈরাচারকে সাংবিধানিক ভাবে প্রতিস্তাপন করা হবে। সেটা হলে বিপুলসংখ্যক ছাত্র জনতার রক্তের সাথে জাতীয়ভাবে বেইমানি করা হবে।