জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মানতেই হলো মমতাকে

0
32

ওদের (জুনিয়র ডাক্তারদের) চারটে দাবির মধ্যে প্রথমটা (ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত) সিবিআইয়ের হাতে। ওদের বাকি চারটে দাবি আমরা মেনে নিয়েছি
ঢাকা ডেস্ক, ১৮ সেপ্টেম্বর : আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের ‘দাবি’ কার্যত মেনে নিলেন মমতা ব্যানার্জি। পুলিশের কমিশনার ভিনীত গোয়েল, ডিসি নর্থ অভিষেক গুপ্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেবাশিস হালদার এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা কৌস্তভ নায়েককে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। গতকাল বিকালেই কলকাতা পুলিশ কমিশনার ভিনীত গোয়েলকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন পুলিশ কমিশনার করা হয়েছে মনোজ কুমার বর্মাকে। গোয়েলকে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের প্রধান পদে নিয়োজিত করা হয়েছে।
অভিষেক গুপ্তাকে উত্তর কলকাতার ডেপুটি কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নের প্রধান করা হয়েছে। কৌস্তভ নায়েককে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ ইনস্টিটিউটের নির্দেশক পদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দেবাশিস হালদারকে সরিয়ে গণ স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসার ও স্পেশাল ডিউটি পদে আনা হয়েছে।
এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার বলেন, এ পদক্ষেপ আমাদের দাবির ন্যায্যতাকে প্রমাণ করে।
তবে কলকাতা থেকে ডিডাবিøউ বাংলার সাংবাদিক স্যমন্তক ঘোষ জানান, পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে ভিনীত গোয়েলকে সরিয়ে যে পদ দেওয়া হয়েছে তা গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত সম্মানজনক। সূত্র জানিয়েছে, তিনি এই পদটিই চেয়েছিলেন। স্পেশাল টাস্ক ফোর্স খুবই এলিট ফোর্স। কলকতা পুলিশে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ বলে পরিচিত।
বিবিসি জানায়, সোমবার দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে প্রশাসনিক রদবদলের প্রতিশ্রæতি দেন মমতা ব্যানার্জি। আর গতকাল তা বাস্তবায়ন করেন।
সোমবার গভীর রাতে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘ওদের (জুনিয়র ডাক্তারদের) চারটে দাবির মধ্যে প্রথমটা (ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত) সিবিআইয়ের হাতে। ওদের বাকি চারটে দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা, ডিসি নর্থকেও সরানো হয়েছে। আমি ওদের কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।
‘নমনীয়’ রাজ্য সরকার : জুনিয়র চিকিৎসকদের টানা আন্দোলন, সেখানে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনসহ সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠনের সমর্থন এবং বিপুল পরিমাণে নাগরিক সমাজের শামিল হওয়ার ফলে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার সে কথা মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একই সঙ্গে তাদের অভিমত, দাবি মেনে রদবদলের প্রতিশ্রতির কিন্তু রাজনৈতিক দিকও আছে। এর মধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী কপিল সিব্বল আশ্বাস দেন আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে না রাজ্য সরকার।
উল্লেখ্য, সোমবারের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিল পুরো দেশ। একাধিকবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা হলেও তা বিফল হয়েছে। গত সপ্তাহে যে তিনবার নবান্নে বৈঠকের প্রস্তাব এসেছিল তার প্রত্যেকবারই মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য অপেক্ষা করেছেন বলে জানানো হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা এ বৈঠক সরাসরি স¤প্রচারের দাবিতে অনড় থাকায় বৈঠক হয়নি।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক খেল বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের প্রবীণ সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক শিখা মুখার্জি বলেন, ‘এক ধাপ এগিয়ে দুই ধাপ পিছিয়ে আসার মতোই এটাও রাজনীতির একটা কৌশল।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী অন্য একটা দিক উল্লেখ করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here