আমেরিকায় ইতিহাস গড়ে আবারো প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর ভোট গণনার সময় ট্রাম্পের জয় প্রায় নিশ্চিত হতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান ট্রাম্পকে। ট্রাম্প-মোদির রসায়নের ফলে আগামীতে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরো মধুর হতে পারে বলে আশা করছেন অনেকেই।
এদিকে, ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকা কোন পথে এগোবে? শনিবার হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে এ নিয়ে নিজের মতামত জানালেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর।
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আমেরিকার অর্থনীতি কোন পথে চলতে পারে বলে মনে করেন জয়শংকর? ট্রাম্পের নীতি নিয়ে জয়শংকর বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে আরো প্রতিযোগিতামূলক করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এ লক্ষ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্ষমতার একটি শক্তিশালী উপাদান নিয়ে এসেছেন।’
‘এ ধরনের একটি আমেরিকা এমন পার্টনারের সন্ধান করবে যাদের সাথে তারা পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে পারবে,’ বলেন তিনি।
জয়শংকর আরো বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের অর্থনৈতিক ও উৎপাদন স্বার্থের বিষয়ে আরো সচেতন হবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই এ প্রযুক্তি জড়িয়ে আছে জাতীয় নিরাপত্তার সাথে। বর্তমানে প্রযুক্তি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিভক্ত করা যাবে না। এবং এটি ডিজিটাল ও এআই বিপ্লবের অংশ।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকা নিজে বৈশ্বিক শক্তিধর দেশ হলেও তারা সব কিছু নিজেরা করতে পারবে না। তাই তাদের অংশীদার দেশ লাগবে।’
জয়শংকর দাবি করেন, ‘মার্কিন নাগরিকরা বিশ্বায়নের প্রভাব নিয়ে অখুশি। আর বিশ্বায়নের সবচেয়ে লাভবান দেশ হলো চীন।’
‘যদি মার্কিন নাগরিকদের ভোটের বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে বোঝা যাবে যে তারা বিশ্বায়নের প্রভাবে অসন্তুষ্ট। বিশ্বায়ন নিয়ে বর্তমানে যখনই আলোচনা করতে হবে, তখনই চীনের নাম নিতে হবে। কারণ তারাই বিশ্বায়নের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। গত ২৫ বছরে বিশ্বায়নের একটি নির্দিষ্ট মডেল অনুসরণ করা হয়েছে। এবং আমেরিকার ক্লিনটন প্রশাসনই সেই মডেল নিয়ে এসেছিল,’ বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এরপর জয়শংকর বলেন, “ভারত কেন শুধু বিশ্বের জন্যে বাজার হয়ে থেকে যাবে… ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ অভিযানের মাধ্যমে ভারত শীর্ষস্থানীয় উৎপাদক দেশও হয়ে উঠতে পারে।”
এদিকে, মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে বলেন, ‘এবারের ভোটের সবচেয়ে বড় দু’টি ইস্যু ছিল – মূল্যস্ফীতি ও অভিবাসন।’
তিনি দাবি করেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাইডেনের অধীনে আমেরিকায় মূল্যস্ফীতির হার কমেছিল। তবে কেরির মতে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টি মানুষের মনের আশঙ্কাকে দূর করতে পারেনি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস