অতীতে জাতগণনার সম্ভাবনা খারিজ করতে দেখা গিয়েছে শাসক শিবিরকে। কিন্তু কার্যত প্রথম বার শাহ সেই সম্ভাবনা যে উড়িয়ে দিলেন না, তার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা।
জনগণনার সঙ্গে জাতগণনার দাবি তুলে সরব সরকারের জোটসঙ্গী জেডিইউ ও টিডিপি। জাতগণনা প্রসঙ্গে সুর নরম করেছে আরএসএস-ও। এই আবহে আজ তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের একশো দিনের মাথায় কার্যত প্রথম বার জাতগণনার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিলেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানালেন, ঠিক সময়ে এ নিয়ে জানানো হবে।
অতীতে জাতগণনার সম্ভাবনা খারিজ করতে দেখা গিয়েছে শাসক শিবিরকে। কিন্তু কার্যত আজ প্রথম বার শাহ সেই সম্ভাবনা যে উড়িয়ে দিলেন না, তার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা। প্রথমত, বিরোধীরা দেশে জাতগণনার পক্ষে সমর্থনের চোরাস্রোত তৈরি করতে পেরেছেন। যে স্রোতের প্রতিকূলে গেলে জনসমর্থনে ধস নামতে পারে। দ্বিতীয়ত জাতগণনার পক্ষে শরিকি চাপও বাড়ছে। গতকাল সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বিহারের ধাঁচে দেশে জাতগণনার দাবি তুলেছেন জেডিইউয়ের কার্যনির্বাহী সভাপতি সঞ্জয় ঝা। বিহারের অপর দুই শরিক জিতনরাম মাঝি বা চিরাগ পাসোয়ানের দলও জাতগণনার পক্ষে আগেই সওয়াল করেছে। জাতগণনার পক্ষে প্রকাশ্যে সরব হয়েছে এনডিএ-র বড় শরিক টিডিপিও। তৃতীয় কারণ হল, আরএসএস এ বিষয়ে স¤প্রতি অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে। দিনকয়েক আগে আরএসএসের মুখপাত্র সুনীল অম্বেকর বলেন, ‘‘জনকল্যাণের লক্ষ্যে জাতগণনার তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। কিন্তু সেই তথ্য যেন রাজনৈতিক লাভ-লোকসানের জন্য ব্যবহার না হয়। ’’
রাজনীতিকদের মতে, আরএসএসের পরিবর্তিত মনোভাবের প্রভাব পড়েছে বিজেপিতে। আজ শাহের বক্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট। তিনি আজ প্রথমে বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে খুব দ্রæত জনগণনার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ আর জাতগণনা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘জনগণনার বিষয়ে যখন ঘোষণা হবে, তখন সব জানানো হবে।’’ রাজনীতিকদের মতে, জাতগণনা সরাসরি হবেই এ কথা না বললেও, তিনি বিষয়টি উড়িয়ে দেননি। যদিও সরকারের কাছে সমস্যা হল, জাতগণনা হলে সম্ভবত স্পষ্ট হয়ে যাবে যে এ দেশে জনসংখ্যার পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ওবিসি। সেই অনুপাতে সংরক্ষণ করতে হলে উচ্চ বর্ণের (জেনারেল) জন্য সংরক্ষণের সুবিধা কাটছাঁট করতে হবে।
তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম একশো দিনে আর যে বিষয়টি নিয়ে শাসক শিবির আতান্তরে, তা হল মণিপুরের পরিস্থিতি। আজ শাহ দাবি করেন, ‘‘মণিপুরের সঙ্গে মায়ানমারের সীমান্ত খোলা থাকায় জঙ্গি আনাগোনা বড় সমস্যা। গত একশো দিনে মণিপুর-মায়ানমার সীমান্তের ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁটাতারের বেড়া বসানো হয়েছে।’’ যুযুধান কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান। অমিতের আশা, দ্রত সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘স্বঘোষিত চাণক্যের (অমিত শাহ) কথা অনুযায়ী সব যদি ঠিক থাকে, তা হলে কেন গত বছর মে মাসের পর থেকে আর সেখানে যাননি প্রধানমন্ত্রী?