‘বাংলায় বুলডোজ়ার চলবে না’! মন্দারমণির সৈকতে হোটেল ভাঙতে নিষেধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

0
12

মন্দারমণি এবং সংলগ্ন এলাকার সৈকতে যে হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন, তা কার্যত নবান্নকে অন্ধকারে রেখেই করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
উত্তরপ্রদেশের মতো বুলডোজ়ার চলবে না বাংলায়। পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণি সৈকতে ‘বেআইনি’ হোটেল ভাঙার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় মঙ্গলবার জানিয়ে দিলেন এ কথা।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের (ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল) নির্দেশ মেনে আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে মন্দারমণির মোট ১৪৪টি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস জারি করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তাতেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। মন্দারমণি এবং সংলগ্ন এলাকার সৈকতে যে হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন, তা কার্যত নবান্নকে অন্ধকারে রেখেই করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এতেই স্তম্ভিত মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ঘোষণা, কোনও রকম বুলডোজ়ার চলবে না বাংলায়।
নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মুখ্যসচিবের সঙ্গে কোনও আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়াই এই নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আর সেই কারণেই ক্ষুব্ধ তিনি। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ-সহ বিজেপি শাসিত কয়েকটি রাজ্যে সা¤প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে নির্মাণ ভাঙতে বুলডোজ়ারের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট স¤প্রতি কড়া ভাষায় এই বুলডোজ়ার সংস্কৃতির নিন্দা করেছে। অতীতে মমতাও বিভিন্ন সময় যোগী আদিত্যনাথ, শিবরাজ সিংহ চৌহানদের বুলডোজ়ার সংস্কৃতির সমালোচনা করেছেন। মঙ্গলবার মন্দারমণির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী তাতে হস্তক্ষেপ করেন। জানান কোনও ভাবেই বুলডোজারের সংস্কৃতি বাংলায় কার্যকর হতে দেবেন না তিনি।
কিন্তু গোটা বিষয়টি যে হেতু আদালতের নির্দেশে হচ্ছে, সেখানে এর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। নবান্নের ওই সূত্রের দাবি, জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই কাজ করার আগে কেন নবান্নকে জানানো হল না। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বিশেষ জনগোষ্ঠীর অভিযুক্তদের বাড়ি নির্বিচারে ভাঙা আর জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে ‘উপকূল নিয়ন্ত্রণ বিধি’ (কোস্টাল রেগুলেশন অ্যাক্ট) মেনে পদক্ষেপ যে এক বিষয় নয়, মুখ্যমন্ত্রী সে সম্পর্কে সচেতন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেটেড জ়োন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি)-র জেলা কমিটির তরফে মন্দারমণি এবং সংলগ্ন আরও চারটি মৌজায় ১৪৪টি হোটেল, লজ, রিসর্ট এবং হোম স্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০ নভেম্বরে মধ্যে ওই সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করতে হবে, নির্দেশ দেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২২ সালে এই বেআইনি হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কারণ, হোটেল, রিসর্টগুলি ‘উপকূল নিয়ন্ত্রণ বিধি’ না মেনেই গড়ে উঠেছিল। এর মধ্যে শুধু দাদনপাত্রবাড়েই রয়েছে ৫০টি হোটেল, সংলগ্ন সোনামুইয়ে ৩৬টি, সিলামপুরে ২৭টি, মন্দারমণিতে ৩০টি হোটেল এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর মৌজায় একটি লজ রয়েছে। এ সবই ভাঙা পড়ার কথা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here