বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন চায় দেশকে রক্ষা, গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।
আজ শনিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৫ বছর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নয়জনকে হত্যা করেছে এই চুয়াডাঙ্গায়। বাসায় ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুধু কী এখানেই? সারাদেশে একই ঘটনা। কোথাও কুপিয়ে, খুন করে, গুলি করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে তারা। একইসাথে পুলিশ বাহিনী তাদের সহযোগিতা করেছে এই হত্যাকাণ্ডে।
এই অবস্থায় বের হতে পেরেছেন বলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন মির্জা ফখরুল।
পুলিশ ঠিকঠাক কাজ করছে না- অনেকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশকে আওয়ামী লীগ যেভাবে ব্যবহার করেছে, কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এভাবে ব্যবহার করতে পারে না।
তিনি বলেন, বিরোধিতা করার জন্য ’৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত এদেশে প্রায় ৩০ হাজার তরুণকে হত্যা করেছে শেখ মুজিব। দমন করতে এই দেশে রক্ষীবাহিনী তৈরি করেছিলেন তিনি এবং প্রথম ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময় স্লোগান ছিল ‘এক নেতার এক দেশ শেখ মুজিবের বাংলাদেশ’। সেইসাথে তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। এদের ভিতর দুইটা জিনিসই আছে, সন্ত্রাস আর চুরি।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান এসেছিলেন একটি দুঃসময়ে। তিনি এসে ১৯ দফা দিয়ে দেশের উন্নয়নে অগ্রভূমিকা রাখতে কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃত করে সবকিছুর চিহ্ন মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস তো মুছে ফেলে দেয়া যায় না। বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। আর যাকে বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তিনি গণতন্ত্রকে হরণ করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলেন, বাকশাল করেছিলেন। অন্যদিকে সেনা ছাউনি থেকে আসা জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদীর যাতাকলে আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, অসংখ্য গুম-খুন-হত্যা করা হয়েছে। তাই আমরা রাষ্ট্রকে মেরামত করতে ৩১ দফা দিয়েছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্কার শেষ করে সাসটেইনবল করতে দরকার জনগণের প্রতিনিধি, এর জন্য দরকার পার্লামেন্ট। অনেকেই বলেন ‘বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়’। বিএনপি নির্বাচন চায় দেশকে রক্ষা, গণতন্ত্র, মানুষের জন্য ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের পরিষ্কার কথা, আমরা তরুণদের রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও নেতৃত্ব দিতে চাই। তরুণ ও ছাত্রদের সাথে আমাদের কোনো সমস্যা নাই বলে জানান।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের যারা ছিলেন, তাদের সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠন করব।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মানুষের কাছে বিএনপি এত পছন্দের কেন, কারণ বিএনপি স্বাধীনতা গণতন্ত্র সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে কোনো আপস করে না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ওদের কাছে মাথা নত করেনি।