বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ধবলধোলাইয়ের তিক্ত লজ্জা দিল বাংলাদেশ। ধবলধোলাই এড়াতে ১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে হতো ইংলিশদের, তবে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানেই থেমেছে থ্রি লায়ন্সদের ইনিংস। ১৬ রানের এই জয়ের মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো দলকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ (ধবলধোলাই) করলো বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। অভিষেক ওভারেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন তানভীর ইসলাম, গোল্ডেন ডাক উপহার দিয়ে ফিরিয়েছেন ফিলিপ সল্টকে। তবে ইংল্যান্ড দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার ডেভিড মালান, তাকে সঙ্গ দেন অধিনায়ক জশ বাটলার। দু’জনে মিলে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে।
প্রথম ওভারেই প্রথম উইকেট তুলে নেয়ার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় ১৩তম ওভারে। ততক্ষণে দলীয় রান তিন অংকে পৌঁছে দিয়েছেন বাটলার-মালান জুটি। সে ওভারেই পরপর ২ বলে ফেরেন দু’জনেই। প্রথমে মালানকে লিটনের ক্যাচ বানান মোস্তাফিজ, পরের বলে রান আউটের ফাঁদে পড়েন বাটলার। মালান ৪৭ বলে ৫৩ ও বাটলার ৩১ বলে করেন ৪০ রান।
শেষ ২৪ বলে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন যখন ৪০ রান, তখন ১০ বলে ৯ রান করে তাসকিন আহমেদের শিকার হন মইন আলি। তিন বল পর তাসকিনই ভাঙেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা বেন ডাকেটের উইকেট। মূলত সেখানেই রঙ বদলায় ম্যাচের, খেলার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে টাইগারদের হাতে। ১৮তম ওভারে মোস্তাফিজ মাত্র ৪ রান দিলে শেষ ১২ বলে প্রয়োজন হয় ৩১ রান।
১৯তম ওভারে সাকিব আল হাসান মাত্র ৪ রান দিয়ে ক্রিস ওকসকে ফেরালে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৭ রান নিতে হতো ইংল্যান্ডকে। প্রথম ২ বলে ২ চার হাঁকালেও শেষ পর্যন্ত মাত্র ১০ রান সংগ্রহ করতে পারে থ্রি লায়ন্সরা। ফলে ১৬ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। টাইগাররা গড়ে তোলে ইংলিশদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইট ওয়াশ করার কীর্তি।
মঙ্গলবার মিরপুর স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে এদিন ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। জমে উঠে উদ্বোধনী জুটি, দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার মিলে পাওয়ার প্লেতে যোগ করেন ৪৬ রান। অবশ্য পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এসে ভেঙে যেতে পারতো এই জুটি, আউট হয়ে যেতে পারতেন রনি তালুকদার। তবে রেহান আহমেদ সহজ ক্যাচ মিস করায় পাওয়ার প্লে শেষেও উইকেটবিহীন থাকে বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ভেঙেছে উদ্বোধনী জুটি। জীবন পেয়েও ইনিংসটা বড় করতে পারেননি রনি তালুকদার। আদিল রাশিদের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। আউট হওয়া আগে খেলেছেন ২২ বলে ২৪ রানের ইনিংস। রনির বিদায়ে ভাঙে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে দারুণ খেলতে থাকেন আরেক ওপেনার লিটন দাস।
পুরো সিরিজ নিষ্প্রভ থাকা লিটন দাস জ্বলে উঠেন স্বরূপে। রনি তালুকদারের পর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দলীয় শতক পূরণ করেন তিনি, একই সাথে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের নবম অর্ধশতক। লিটনকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন নাজমুল শান্ত। সিরিজে বাংলাদেশের সেরা এই পারফর্মার এদিনও জ্বলে উঠেন ধারাবাহিকতা ধরে রেখে। ফলে ইংল্যান্ডের জন্যে ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে থাকে লিটন-শান্ত জুটি।
এই জুটি ভাঙে ১৭তম ওভার শেষে দলীয় ১৩৯ রানে। ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রান করে আউট হন লিটন, ১০ চার আর ১ ছক্কায় ৫৭ বলে এ রান করেন তিনি। লিটন আউট হওয়ার আগের ওভার থেকেই অবশ্য কমে আসতে থাকে রানের গতি। ১৫৮ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে একটা করে উইকেট নেন ক্রিস জর্ডান ও আদিল রাশিদ।