ভারত সরকার আয়োজিত একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে যোগ দিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের প্রতিনিধিরা। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রশিক্ষণে তালেবানকে শামিল করে আফগানিস্তানের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে চাইছে ভারত। ভারতে কেরল রাজ্যের কোঝিকোড়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম) মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিষয় বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য- দারি ভাষায় একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আফগানিস্তানের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোম্যাসি এই প্রশিক্ষণে যোগদানের কথা জানিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই জানিয়েছে, তালেবান প্রতিনিধিরা প্রশিক্ষণে যোগ দিলেও কাবুল নিয়ে নয়াদিল্লির নীতি একই থাকছে। তা ছাড়া এই প্রশিক্ষণ হচ্ছে অনলাইনে। সরাসরি কাবুলের প্রতিনিধিরা এ দেশে আসছেন না। আর অন্য অনেক দেশের প্রতিনিধিরাও যোগ দিচ্ছেন প্রশিক্ষণে। যদিও বিরোধী কংগ্রেস এই দাবি মানতে চায়নি। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে। অবশ্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরই একটি অংশ মনে করছে, এই প্রশিক্ষণে তালেবানকে শামিল করে আফগানিস্তানের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে চাইছে ভারত।
২০২১ সালের অগস্টে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে তালেবান। তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। ১০ মাস পর ২০২২ সালের জুলাইয়ে কাবুলে দূতাবাস খোলে দিল্লি। তবে দূতাবাস না বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কাবুলে ‘প্রযুক্তি দল’ মোতায়েন করা হয়েছে, যারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবে। এর পর ক্রমে তালেবানের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার থেকে অনলাইনে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। তাতে যোগ দেয়ার জন্য ভারতের প্রযুক্তি এবং আর্থিক সহযোগী (ইন্ডিয়ান টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন প্রোগ্রাম) দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সর্বোচ্চ ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি আমলা, শিল্পপতি, উদ্যোগপতি।
ঠিক কী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এই চার দিনে? আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রয়েছে বলেই ভারত অনন্য। তবে এই কারণে অনেক সময়ই বাইরের দেশগুলোর কাছে ভারত কিছুটা অবোধ্য হয়ে ওঠে। ভারতে আপাত বিশৃঙ্খলার মধ্যে যে শৃঙ্খলা রয়েছে, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেটাই বুঝতে পারবেন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। ভারতের বাণিজ্যিক আবহের বিষয়টিও বুঝতে পারবেন তারা।’ আয়োজকরা আরো জানিয়েছেন, ভারতের অর্থনীতি, সামাজিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিষয়টিও তুলে ধরা হবে প্রশিক্ষণে।
আয়োজকদের সূত্রের খবর, কাবুলের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি যোগ দিচ্ছেন এই প্রশিক্ষণে। তাদের মধ্যে থাকবেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও। যেহেতু অনলাইনেই নেয়া যাবে প্রশিক্ষণ, সে কারণে ভারতে না এসেই যোগ দিতে পারবেন তারা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি অংশ বলছে, এ ভাবেই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আরও একটু যোগাযোগ বাড়বে ভারতের।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা