ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩ আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ফলাফলের। আগামীকাল (মঙ্গলবার) এ ফলাফল ঘোষণা করা হবে। তবে তার আগেই চলছে বুথফেরত জরিপের ফলাফল নিয়ে জোর জল্পনা-কল্পনা। বুথফেরত জরিপে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, আবারও ক্ষমতায় আসছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। সে কারণে চাঙা অবস্থায় রয়েছে ক্ষমতায় থাকা মোদি শিবির। সূত্র : ভারতীয় গণমাধ্যম।
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, বুথফেরত জরিপই শুধু বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএর জন্য সুখবর দিচ্ছে না। একই বার্তা দিচ্ছে ভবিষ্যৎ আঁচ করা ‘সাট্টা বাজার’ও। যদিও কংগ্রেস দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে দাবি করেছেন, ‘ইন্ডিয়া’ জোট ২৯৫টির বেশি আসনে জিতবে। গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোট অন্তত ২৯৫ আসন পাবে। এর বেশিও হতে পারে; কিন্তু কম হবে না। আমরা সব নেতার সঙ্গে আলোচনা ও ভোট বিশ্লেষণ করে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।’ তবে বুথফেরত জরিপ বলছে, শরিকদের নিয়ে তৃতীয় বার কেন্দ্রে সরকার গড়তে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। ‘৪০০ আসন পার’ হবে কি না- তা নিয়েই জল্পনা-কল্পনা চলছে। কয়েকটি বুথফেরত সমীক্ষা এনডিএকে ৪০০-এর বেশি আসন দিয়ে রেখেছে। আর সাট্টা বাজারের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস’ বলছে, বুথফেরত সমীক্ষার মতোই সাট্টা বাজার এনডিএকে এগিয়ে রাখছে। বাজারের পূর্বাভাস, এনডিএ পেতে পারে ৩৫০-৩৫৫ আসন। একা বিজেপি জিততে পারে ৩০৩-৩০৫ আসনে। বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ৮০-৮৫টি আসন জিততে পারে। গুজরাট, হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখন্ডের সব লোকসভা আসনই জিতবে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশের ২৯টি আসনের মধ্যে ২৫ থেকে ২৭টি আসন পেতে পারে বিজেপি। রাজস্থানের ২৫টি আসনের মধ্যে ১৮-২০টি আসনই পেতে পারে বিজেপি। হরিয়ানায় বিজেপি পেতে পারে ৫-৬টি আসন, ওড়িশায় ১১-১২টি আসন, তেলঙ্গানায় পেতে পারে ৫-৬টি আসন। ঝাড়খন্ড এবং ছত্তিসগড়ে ১০-১১টি করে আসন জিততে পারে বিজেপি। দিল্লিতে পেতে পারে ৫-৬টি আসন। এ ছাড়া উত্তরপ্রদেশে বিজেপি পেতে পারে ৫৫-৬৫ আসন। বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ভাগে পড়তে পারে ১৫-২৫টি আসন। প্রসঙ্গত, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে সাট্টা বাজারের পূর্বাভাস মিলে গিয়েছিল। এখন দেখার বিষয় ২০২৪ সালেও সেই ধারা বজায় থাকবে কি না। এদিকে কলকাতা থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অরুণাচল প্রদেশে বিধানসভার নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করতে চলেছে বিজেপি। অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের আরেক রাজ্য সিকিমে সরকার গড়তে চলেছে ‘সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা (এসকেএম)’। অরুণাচল প্রদেশে সরকার গড়তে গেলে প্রয়োজন ৩১ আসন। সেখানে বিজেপি জয় পেয়েছে ৪৬ আসনে। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আগেই ১০ আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। প্রধান প্রতিপক্ষ ‘ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’ (এনপিপি) পেয়েছে ৫টি আসন, ১টি আসনে জয় পেয়েছে শতাব্দী প্রাচীন দল কংগ্রেস এবং অন্যরা ৮টি আসনে জয়ী হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্ডু এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী চাওনা মেইন- উভয়েই তাদের নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে সিকিমে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৭ আসন। সেখানে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল ‘সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা’ (এসকেএম) ৩১ আসনে জয়ী হয়েছে। প্রধান প্রতিপক্ষ ‘সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট’ (এসডিএফ) এর ঝুলিতে গেছে মাত্র ১টি আসন। আগামী ৪ জুন ভারতের ৫৪৩ আসনে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনার দিন দেশটির আরও দুই রাজ্য -অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা বিধানসভার আসনের ভোট গণনা হবে।