শপিংমলে আগেভাগেই ঈদের কেনাকাটার ধুম

0
10

রমজান শুরুর প্রথম ছুটির দিন থেকেই বিপণি বিতান, শপিংমল ও ফুটপাথে ঈদ কেনাকাটার ধুম পড়েছে। গত শুক্রবার থেকে প্রতিটি শপিংমল, রাজধানীর বিভিন্ন ফুটপাথে ভিড় করছেন ক্রেতারা। নিজেদের স্বাধ্যমতো কেনাকাটা করতে পছন্দের পোশাক খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ক্রেতারা বলছেন শুরুতে শপিংয়ে পছন্দের ডিজাইন ও সাইজ পাওয়া যায়। কেনা পোশাক পছন্দ না হলে পরিবর্তনের সময়ও বিড়ম্বনা হয় না। পর্যাপ্ত সংগ্রহ থাকায় ইচ্ছেমতো রদবদলও করা যায়। কিন্তু দেরিতে শপিং করলে ডিজাইন, রঙ আর প্রয়োজনীয় সাইজ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ভালো সুযোগ হাতছাড়া না করতেই তারা আগেভাগে কেনাকাটা সারছেন।

রমজান শুরুর প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার রাজধানীর একাধিক শপিংমল, বিপণি বিতান ও ফুটপাথ ঘুরে কেনাকাটার এমন চিত্র উঠে আসে।

রাজধানীর নাটকপাড়া বলে খ্যাত বেইলি রোডের নাভানা বেইলি স্টার, সিরাজ শপিং কমপ্লেক্স, ইনফিনিটি, ইয়োলো, সাদাকালো, অঞ্জনস, আর্টিসানসহ অভিজাত বিপণি ও পোশাকের দোকানগুলোতে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়।

ইনফিনিটির এক কর্মী জানান, তাদের এখানে সবধরনের পোশাক ছাড়াও ঘর সংসারের সামগ্রী, বোরকা, কসমেটিকস, জুতা, শোপিস ও শিশুদের নানান সামগ্রী রয়েছে। সকাল থেকে গেট খোলা থেকে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত ক্রেতারা আসছেন। নিজেদের পছন্দের পোশাক নিয়েই তারপর ঘরে ফিরছেন। তাতে আশাবাদী যে, গতবারের চেয়ে এবার বিক্রি বাড়বে।

আর্টিসানের এক বিক্রয়কর্মী জানান, মূলত প্রতি বছর রমজানের শুরুতে এমন ক্রেতার দেখা কম মেলে। এবার শুরুতেই বিক্রি জমেছে। সকাল থেকে বন্ধ পর্যন্ত ক্রেতা আসছেন। যারাই আসেন তারা যে একেবারে খালি হাতে ফিরছেন তা নয়। কিছু না কিছু কেনাকাটা করছেন।

ইয়েলোর এক নারী বিক্রয়কর্মী জানান, ঈদ ঘিরে তারা অনেক ডিজাইন নিয়ে এসেছেন। নারী-পুরুষ ও শিশুদের জন্য নিত্যনতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, পায়জামা, থ্রিপিস-সহ সবই তারা বিক্রি করছেন। ক্রেতারা যাতে তাদের পছন্দের কাপড়টি কিনতে পারেন তা ধারণায় রেখেই এবার ডিজাইনে নতুনত্ব আনা হয়েছে। এতে করে আগতরা স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন। অপর দিকে মগবাজার আড়ংয়ে গিয়েও ক্রেতার ভিড় লক্ষ করা যায়। আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মীরা জানান, তাদের মনে হচ্ছে এবার একটু আগেভাগেই বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। তবে এমন ভিড় সাপ্তাহিক বন্ধের কারণ কি না তা অবশ্য পরে বুঝা যাবে। তাদের ভাষ্য, প্রতি বছর শপিং একটু সময় নিয়েই শুরু হয়; কিন্তু এবার একটু এডভান্স মানুষ শপিংয়ে নামছেন ভিড় ও ধাক্কাধাক্কির বিড়ম্বনা এড়াতে।

বসুন্ধরা শপিংমলে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রবেশপথে মানুষের দীর্ঘ লাইন। সারিবদ্ধ মানুষকে চেক করিয়ে নিরাপত্তাকর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। এ সময় একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, শুক্রবার থেকে মার্কেটে অনেক ক্রেতা আসছেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার মনে হচ্ছে বেশি মানুষ আসছেন।

মার্কেটের ভেতরে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি লিফটের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন। চলন্ত সিঁড়িতে মানুষর ভিড়। একজন বিক্রেতা বলেন, এবার বসুন্ধরা মার্কেটে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইটেম অনুযায়ী শপিংমল সাজানো হয়েছে। ক্রেতা যাতে তার পছন্দের সব একসাথে খুজে পান সে জন্য এমন ব্যবস্থা। সে অনুযায়ী সব মোবাইল দোকান গ্রাউন্ড ফ্লোরে, ব্যাগ, জুতাসহ চামড়ার সব সামগ্রী ছয় তলায় আনা হয়েছে। এভাবে করে প্রতিটি ফ্লোরকে পণ্য অনুযায়ী এক করে অনা হয়েছে, যা ক্রেতাদের জন্য বাড়তি সুবিধা যোগ করেছে।

আগেভাগেই কেনাকাটার কারণ সম্পর্কে একাধিক ক্রেতা জানান, আগে শপিং করলে পছন্দের সব আইটেম পাওয়া যায়। সময় যত ঘনিয়ে আসে তাতেই ডিজাইন পর্যাপ্ত থাকে না। আবার অনেকসময় কাপড় কেনার পর বাসায় নিয়ে কোনো কারণে পরিবর্তন করতে হয়। দেরিতে শপিং কারলে সে সুযোগটি নেয়া গেলেও সাইজ বা ডিজাইন পর্যাপ্ত না থাকায় তখন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সবমিলিয়ে পরবর্তী ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতেই তারা আগেই শপিং সারছেন বলে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here