দেশবাসী আপনাদের বিবেককে জাগ্রত করুন এবং এসব মহা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এখনই চরম প্রতিবাদ করুন!!! আজ তোফাজ্জল নামে একটি সুঠাম সুন্দর দেহের অধিকারী ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শান্ত মস্তিষ্কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছ। মায়ের আদরের সন্তান এই তোফাজ্জল। মাকে নাকি সে খুব ভালোবাসতো। মায়ের আদরের সাত রাজার ধনকে কুলাঙ্গাররা মেরে ফেলেছে। সব মা বাবাকে বলছি এর প্রতিবাদ করুন আর এসব কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা নিন! এই তোফাজ্জলকে সন্ত্রাসীরা ভাত খেতে দেয় প্রথমে। সে খুবই ক্ষুধার্ত ছিল। তখন সে ভাবছিল হয়তো তাঁকে কয়টা চড় তাপ্পর দিয়ে ছেড়ে দিবে। কিন্তু তা হয়নি। অনেক পশুরা মিলে মারতে মারতে হত্যা করেছে। কি নির্মমতা বুঝতে পারছেন??? ভাবলেই আঁতকে উঠে মন!!! দেশের সাধারণ মানুষ আর আপনারা কত নীরব থাকবেন??? ওরা উৎসব মন্ডলকে প্রশাসনের নিকট থেকে ছিনিয়ে গলায় পা দিয়ে উল্লাস করে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্য করেছে! আজ এই তোফাজ্জল কে সবাই মিলে মারতে মারতে হত্যা করেছে!!! আর আপনারাসহ দেশের সুশীল গভর্নমেন্ট চেয়ে চেয়ে দেখছে! উনাদেরকে বলেন টাকা লগ্নি করে মানুষের নিকট থেকে ৩০-৩৫% সুদ নিয়ে মানুষের জীবনকে অশান্তিময় করে তুলে “শান্তিতে নোবেল” পাওয়া আর সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা এক জিনিষ নয়!!! সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করতে হলে আগে সুন্দর মানুষ হতে হয়! সুন্দরকে, মানবিকতাকে মননে ধারণ করতে হয়! প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়! নিরপেক্ষ প্রশাসনিক মনশ্চক্ষুর অধিকারী হতে হয়! দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হতে হয়! সর্বোপরি দেশের সব মানুষের প্রতি অন্তরে দরদ মমতা থাকতে হয়। এটি একদিনে হয় না। মানুষকে মানুষ হিসাবে সম্মান করা ও ভালোবাসার উপলব্দিতে সাজানো পরিমন্ডলে বেড়ে উঠতে হয়। সহজ কথায় মানবিক সুন্দর ও মানুষের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা বোধ জাগ্রত হবার মত সুন্দর সামাজিকায়ন প্রক্রিয়ায় বেড়ে উঠতে হয়!
শুধু বড় ডিগ্রী ও বড় বড় পুরস্কার পেলেই সবকিছু হয় না। বড় বড় ডিগ্রীধারীদের অনেকের অনাচারে বার বার অতিষ্ঠ ও কষ্ট পেয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। তাই জগত বিখ্যাত পন্ডিত প্লেটোর জীবনের অভিজ্ঞালব্দ জ্ঞানেই প্রকাশ পেয়েছে সেই বিখ্যাত উক্তি “মানুষ যেমন হবে রাষ্ট্রও তেমনিই হবে। মানুষের চরিত্র দ্বারাই রাষ্ট্র গড়ে হয়।” সুতরাং বাংলাদেশের আজকের রাষ্ট্রও কি তার প্রতিফলন নয়? দেশের সব সম্পদের ভান্ডার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাঁদের শ্রমে গড়া এই দেশ তাঁরা কখনোই ধ্বংস হতে দিবে না!!! শুধু বুঝার জন্য যেটুকু সময় প্রয়োজন! তার জন্য অপেক্ষামাত্র! দেশের খাবারের যোগান দেয় তাঁদের রক্ত জলে পরিনত করার বিনিময়ে কৃষক। শ্রমের যোগান দেয় শ্রমিক। শিক্ষা প্রদান করেন শিক্ষক। চিকিৎসা দেন চিকিৎসক। সেবা প্রদান করেন নার্স। পোষাক শিল্প যাদের হাতে নান্দনিক হয়ে উঠে তাঁরা হলেন বাংলার নারী শক্তি। সংগীত শিল্পকলার সাধনায় দেশকে সুন্দরের ভূষণে অলংকৃত করেন শিল্পী সমাজ। আর আগামীর অমিত সম্ভাবনাকে ধারণ করে নতুন স্বপ্ন নিয়ে যারা জীবনের পথে অগ্রগমন করছে তারা হল যুব সমাজ। সুতরাং এই বাংলাদেশ হল এই মানুষ গুলোর। যারা সত্যি সুন্দর! যারা দেশকে ভালোবাসেন এবং দেশের অগ্রগতি ও সৃজনশীল উন্নয়নের স্বপ্ন মনে লালন করেন!
এখন সময় এসেছে আপনাদের সবার একত্রিত হবার। আপনাদেরকে দেশ রক্ষায় এখন রাস্তায় নামতে হবে। যারা দেশে ক্রমাগত বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য এবং সুস্হ মাথায় সম্মিলিতভাবে উল্লাস প্রদর্শনের মাধ্যমে উৎসব ও তোফাজ্জলদের মত সুন্দর ছেলেদের হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান! আপনাদের দেশ আপনাদের রক্ষা করতে হবে! যারা আপনাদের স্বার্থে দেশ পরিচালনা করবে তারা ক্ষমতায় থাকবে। যারা আপনাদের স্বার্থ, দেশের শিষ্টাচার, সম্প্রীতি ও উন্নয়ন পরিপন্হি কাজ করবে তাদেরকে এই মহান আসনে বসে সুযোগ সুবিধার অযোগ্য ব্যবহারের দরকার নেই!!! অযোগ্য লোকেদের দিয়ে কোনকালেও শুভ সুন্দর কিছু হয়নি! আপনাদের দেশ রক্ষার জন্য সম্মিলিতভাবে প্রতিটি গ্রাম, শহর, পাড়া, মহল্লা থেকে এগিয়ে আসুন। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সংস্কার, সংস্কৃতি চরম অবস্হার নিপতিতি হবার পূর্বে সব অশুভ শক্তিকে ঝেটিয়ে বিদায় করে সঠিক মানুষের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া আজ আপনাদের নৈতিক ও একান্ত কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর চুপ থেকে দেশকে একটি ধ্বংসস্তুপে পরিনত করবেন না! ঈশ্বর আপনাদের ও দেশের মঙ্গল করুক!
শৈলেন কুমার দাশ