হাসিনাকে ফেরত এনে বিচার করা সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য : প্রেস উইং

0
4

জুলাই বিপ্লবে দেশ ছেড়ে ভারতে পালানো স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে সশরীরে বিচার করানো সরকারের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এছাড়া জুলাই গণহত্যা ও গুম-খুনের সাথে জড়িতদের বিচারের পর আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘কিছুদিন আগে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনের যে রিপোর্ট হয়েছে, তাতে স্পষ্ট শেখ হাসিনা কী ধরনের অপরাধ করেছেন। তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এটা বড় ধরনের অপরাধ। জাতিসঙ্ঘ ও কিছু কিছু মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের পর অনেক চাপ তৈরি হয়েছে। এই চাপের একটা নমুনা দেখেছেন যে ইন্ডিয়া টুডে একটা জরিপ করেছে, সেখানে দেখা গেছে ৫৫ শতাংশ চায় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে। কিছু শতাংশ চাচ্ছে তাকে অন্যদেশে দিতে। মাত্র ১৬-১৭ শতাংশ মানুষ চায় শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখতে।’

শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে সশরীরে বিচার করানো সরকারের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে জানান শফিকুল আলম।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই কথা, আওয়ামী লীগের যেসব নেতা-কর্মী, সমর্থক যারা জুলাই গণহত্যার সাথে জড়িত, তারও আগে গুম-খুনের সাথে যারা জড়িত, যারা ম্যাসাকারে জড়িত, করাপশনে জড়িত- সবার অবশ্যই বিচার হবে। তারপর বাংলাদেশের মানুষ, পলিটিক্যাল পার্টি তারা সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কী হবে।’

আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা খুব দ্রুত উঠে যাবে
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা নিষেধাজ্ঞা খুব দ্রুত উঠে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, তাদের সাথে সম্পর্ক তলানিতে চলে গিয়েছিল, এ সম্পর্ক ভালো করতে কমপ্রিহেনসিভ আলোচনা শুরু করেছে সরকার। আমিরাতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

শফিকুল আলম বলেন, ‘দুবাইয়ে গভর্নমেন্ট সামিট প্রতিবছর হয়। এ উপলক্ষে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার দেড় দিনব্যাপী সফর ছিল। ওই সফরে তিনি ছিলেন প্রধান (মেজর) অংশগ্রহণকারী (পার্টিসিপেন্ট)। আমিরাতের সাথে আমাদের ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা চলছে। আমিরাতে আমাদের ভিসা রেসট্রিকশন (নিষেধাজ্ঞা) আছে। এটা বহু বছরের একটা পুরোনো সমস্যা। ২০১২ সাল থেকে একটি পুঞ্জীভূত সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমাদের যারা জাহাজের ক্রু তারা ভিসা পাচ্ছেন না। সবার জন্য ভিসা একটা বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গভর্নমেন্ট সামিটে প্রধান উপদেষ্টার সাথে যখন আমিরাতের মন্ত্রীদের বৈঠক হয় তখন তিনি বারবার বিষয়টি উঠিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে সিরিয়াস আলাপ হয়েছে। এই আলাপগুলো সামনে আরো অব্যাহত থাকবে।’

প্রেস সচিব আরো বলেন, ‘এ আলাপের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সাথে আমরা নতুন করে অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ করছি। ওদের সাথে সম্পর্কের উন্নয়নে কম্প্রিহেনসিভ ডায়ালগ হয়েছে। এর ফলে কয়েকটি বিষয় হবে- আমিরাত থেকে বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে। এছাড়া আমাদের ওপর যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেটা দ্রুত উঠে যাবে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে অনেক বাংলাদেশী বিশেষ করে প্রশিক্ষিত শ্রমিকরা সেখানে চাকরি পাবেন।’

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি দেখার জন্য অধ্যাপক ইউনূস তার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীকে নিযুক্ত করেছেন। তিনি সেখানকার চার-পাঁচজন মন্ত্রীর সাথে বিস্তারিত কথাবার্তা বলেছেন। কথাবার্তা বলার পর আমিরাত এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের উন্নয়নে সিরিয়াস।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমিরাতের সাথে আমাদের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। সেখান থেকে সম্পর্ক (বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা) উন্নতির দিকে যাবে। বিশেষ করে আমাদের জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here