মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে রাজধানীতে সোমবার মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ করেছে বিএনপি। এর মাধ্যমে পাঁচ মাস পর আবারও মাঠের রাজনীতিতে সরব হলো দলটি। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৪৮ দিন পর তিনি সমাবেশে উপস্থিত হলেন।
মির্জা ফখরুল রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হওয়ায় নেতাকর্মীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় দলের মহাসমাবেশ পণ্ড করে দেয় পুলিশ। এর পরদিন মির্জা ফখরুল গ্রেপ্তার হন।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘জোর করে ক্ষমতা দখলকারী সরকার আজ মানুষের বুকে চেপে বসেছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তারা ১৯৭৫ সালেও বাকশালের মাধ্যমে প্রতারণা করেছিল, আর এখন ছদ্মবেশী গণতন্ত্রের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বলে দেশে এখন ছদ্মবেশে একদলীয় শাসন চলছে। যে ভোটাধিকারের মাধ্যম দেশে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, সে অধিকার আজ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সত্য কথা বললেই আজ গ্রেপ্তার করা হয়।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আন্দোলনে সস্পৃক্ত করতে পারলেই হবে গণঅভ্যুত্থান, হবে জনগণের বিজয়। তাই জনগণকেও আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
দিবসটি উদযাপনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে আহŸায়ক এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে সদস্য সচিব করে ১৬ সদস্যের কমিটি করা হয়। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে তিন দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন।
মাইক ব্যবহারের অনুমতিসহ নির্বিঘ্নে সমাবেশ করায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে ২০ মার্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দেয় মুক্তিযোদ্ধা দল। জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, সমাবেশে সারাদেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন।
এ ছাড়া তিন দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ভোরে দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ, পরে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ২৭ মার্চ আলোচনা সভা হবে।
গত ১৫ ফেব্রæয়ারি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এর পর থেকেই রাজপথের কর্মসূচিতে অনুপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন মহলে রাজনীতি থেকে তাঁর অবসরের গুঞ্জন শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার আগে ঘরোয়া কয়েকটি বৈঠকে তিনি অংশ নিয়েছিলেন।