মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোকে ২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার অধিকার দেয়ার যে সিদ্ধান্ত ফিফা নিয়েছে তার ফলে আমরা ২০২৬ বিশ্বকাপে ৪৮ দলের একটি টুর্নামেন্ট দেখতে পাব। এত দল নিয়ে এর আগে কোনো বিশ্বকাপ হয়নি। কিন্তু এটা কিভাবে হবে?
একটি ওয়ার্ড কাপ প্লে-অফ টুর্নামেন্টসহ নতুন যোগ্যতা সিস্টেম
৪৮ দলের বিশ্বকাপ ফিফায় জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর মূল নীতিগুলোর একটি। এর ফলে প্রতিটি কনফেডারেশন থেকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা পাওয়া দলগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে ওশিয়ানিয়ার সামনে। এই নতুন নিয়মে প্রতি বছর সেখান থেকে অন্তত একটি দল মূল পড়বে জায়গা পাবেই। বিভিন্ন মহাদেশের জন্য নতুন বরাদ্দ হওয়া সংখ্যা কত?
এশিয়া : আটটি দল। আগে ছিল ৪.৫টি।
আফ্রিকা : নয়টি দল। আগে ছিল ৫টি।
উত্তর এবং মধ্য আমেরিকা : ছয়টি দল। এর মধ্যে তিনটি হোস্ট দল। আগে ছিল ৩.৫টি।
দক্ষিণ আমেরিকা : ছয়টি দল। এর আগে ছিল ৪.৫টি।
ওশিয়ানিয়া : একটি দল। আগে ছিল ০.৫টি।
ইউরোপ : ১৬টি দল। আগে ছিল ১৩টি দল।
এছাড়াও একটি নতুন বিশ্বকাপ প্লে-অফ মিনি-টুর্নামেন্ট থেকে দুটি ফাইনাল স্পট পাওয়া যাবে।
কোন মহাদেশ থেকে কীভাবে মূল পর্বে আসবে দল
ইউরোপ
মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ৫৫। চার অথবা পাঁচ দলের ১২টি গ্রুপ করা হবে। ১২ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন সরাসরি বিশ্বকাপে যাবে। সেরা চার রানার্সআপ বিশ্বকাপে যাবে নাকি প্লে-অফ থেকে বাছাই করা হবে চার দল, সেটি এখনো ঠিক হয়নি।
ওশিয়ানিয়া
মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ১১। এবারই প্রথম ওশিয়ানিয়া অঞ্চল থেকে একটি দল সরাসরি বিশ্বকাপে যাবে। আর একটি দল যাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে। কিভাবে খেলা হবে, সেটি এখনো ঠিক করেনি ওএফসি।
দক্ষিণ আমেরিকা
মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ১০। আগের মতোই ডাবল লিগ পদ্ধতিতে খেলবে এই মহাদেশের ১০টি দল। সেরা ৬টি দল সরাসরি ২০২৬ বিশ্বকাপে সুযোগ পাবে। পয়েন্ট তালিকার সপ্তম দল সুযোগ পাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে খেলার।
উত্তর আমেরিকা
মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ৩২। তিন হোস্ট দেশ কানাডা, মেক্সিকো ও আমেরিকা সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে।
প্রথম রাউন্ড
আগামী নভেম্বরে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে মহাদেশের শেষ চার দল দুই লেগের দুটি প্লে-অফ খেলবে। জয়ী দুই দল দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে।
দ্বিতীয় রাউন্ড
৩০টি দলকে ৬টি গ্রুপে ভাগ করা হবে। সিঙ্গল লিগের শেষে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপরা তৃতীয় রাউন্ডে উঠবে।
তৃতীয় রাউন্ড
১২টি দল ৩ গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। ডাবল রাউন্ড রবিন লিগের শেষে তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন তিন দল বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। সেরা দুই রানার্স আপ দল যাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে।
আফ্রিকা
মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ৫৪।
প্রথম রাউন্ড
৫৪ দলকে ৯ গ্রুপে ভাগ করা হবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে রাউন্ড রবিন লিগ শেষে প্রতি গ্রুপের একটি করে চ্যাম্পিয়ন সরাসরি পাবে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট।
দ্বিতীয় রাউন্ড
সেরা চার গ্রুপ রানার্স আপ দল প্লে-অফ খেলবে। নকআউট প্লে-অফ শেষে একটি দল সুযোগ পাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে।
এশিয়া
মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ৪৭।
সবচেয়ে জটিল বাছাইপর্ব রয়েছে এই এশিয়া মহাদেশেই। মোট পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ার বাছাইপর্ব।
প্রথম রাউন্ড
২৭ জুলাই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শেষে থাকা এই মহাদেশের ২২ দল হোম এবং অ্যাওয়ে ভিত্তিতে দুই লেগের প্লে-অফ খেলবে। জয়ী ১১ দল যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে।
দ্বিতীয় রাউন্ড
র্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার সেরা ২৫ দলের সঙ্গে যোগ দেবে প্রথম রাউন্ড পেরোনো ১১ দল। এই ৩৬ দলকে ৯ গ্রুপে ভাগ করা হবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে রাউন্ড রবিন লিগের শেষে প্রতি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দল তৃতীয় রাউন্ডে উঠবে।
তৃতীয় রাউন্ড
১৮ দলকে ৩ গ্রুপে ভাগ করা হবে এখানে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে রাউন্ড রবিন লিগের পরে এই তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দল ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। গ্রুপে তৃতীয় ও চতুর্থ হওয়া ছয় দল যাবে চতুর্থ রাউন্ডে।
চতুর্থ রাউন্ড
ছয়টি দলকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হবে। সিঙ্গল লিগের শেষে দুই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বিশ্বকাপের টিকিট পাবে।
পঞ্চম রাউন্ড
চতুর্থ রাউন্ডের দুই গ্রুপ রানার্স আপ প্লে-অফ খেলবে। জয়ী দল যাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে।
আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ
প্লে-অফের ছয় দলের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা শেষ চারটি দল দুটি নকআউট ম্যাচ খেলবে। জয়ী দুই দল র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দুই দলের সঙ্গে নকআউট ম্যাচ খেলবে। জয়ী দুই দল বিশ্বকাপের মূল পর্বে যাবে।
মোট কত দেশ খেলবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে
আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফে এশিয়া থেকে থাকবে ১ দল, উত্তর আমেরিকা থেকে ২ দল, আফ্রিকা থেকে ১ দল। একইসাথে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে থাকবে ১ দল এবং অশিয়ানিয়া থেকে থাকবে ১ দল।
সূত্র : জি নিউজ