ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

0
15
ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের কাছে পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওমানের মাধ্যমে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, চুক্তিটি গ্রহণ করা ইরানের স্বার্থে ভালো হবে। তবে চুক্তির নির্দিষ্ট শর্তাবলী এখনো প্রকাশ করা হয়নি। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আল বুসাইদি সম্প্রতি তেহরান সফরে এসে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি-সংক্রান্ত কিছু ‘মূল উপাদান’ তুলে দিয়েছেন।

এই প্রস্তাবটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান আবারও সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন বাড়িয়েছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে উদ্বেগজনক পদক্ষেপ।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “চুক্তিটি ইরানের গ্রহণ করাই তাদের স্বার্থে ভালো”। তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন- ইরান কখনওই পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারবে না।”

প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ তেহরানকে পাঠিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “এই প্রস্তাবের জবাব আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও জনগণের অধিকার অনুযায়ী দেব।”

আইএইএ এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০০ কেজির বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করে রেখেছে—যা অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশ মাত্রার খুব কাছাকাছি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি পর্যাপ্ত পরিমাণ যাতে ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব, যদি আরও পরিশোধন করা হয়। মূলত ইরানই একমাত্র দেশ যার পারমাণবিক অস্ত্র না থাকা সত্ত্বেও এতো উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম তৈরি করছে।

এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি আইএইএ-র বোর্ডে ইরানকে পারমাণবিক চুক্তির লঙ্ঘনকারী হিসেবে ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইরান এসব অভিযোগকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” ও “ভিত্তিহীন” বলে দাবি করেছে এবং সতর্ক করেছে যে, আইএইএ-র বোর্ডে যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে তারা “উপযুক্ত জবাব দেবে”।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা সীমিত করার চেষ্টা করে আসছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পর্দার আড়ালে আলোচনা চলছে।

দুই পক্ষই আলোচনা নিয়ে আশাবাদী হলেও মূল বিতর্ক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অধিকার নিয়ে। আইএইএ-এর সর্বশেষ রিপোর্ট বলছে, ইরান গত তিন মাস ধরে প্রতি মাসেই এমন মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরি করেছে যা একেকটি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সূত্রের মতে, ইরান চাইলে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে অস্ত্র-মানের ইউরেনিয়াম তৈরি করতে পারে এবং কয়েক মাসের মধ্যে পারমাণবিক বোমাও বানাতে সক্ষম। যদিও ইরান বরাবরই বলেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here