বিশ্বের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র সম্প্রসারণের কারণে। মার্কিন সামরিক ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন কেবল প্রচলিত সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে না, বরং তার পারমাণবিক বাহিনীর আকার ও সক্ষমতাও দ্রুত ও টেকসইভাবে বাড়াচ্ছে। বুধবার (২০ আগস্ট) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
চীনের পারমাণবিক সম্প্রসারণের বিষয়টি মার্কিন কংগ্রেসেরও সতর্কতার কারণ। মার্কিন কৌশলগত কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল অ্যান্থনি কটন মার্চ মাসে জানিয়েছিলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নির্দেশ দিয়েছেন ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত রাখতে। এর জন্য স্থল, আকাশ ও সমুদ্র থেকে আঘাত হানতে সক্ষম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। পেন্টাগনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীন নিজস্ব নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক প্রভাব বৃদ্ধির জন্য এই পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
চীনের ২০২৩ সালের জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি অনুযায়ী, তারা ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’ নীতি মেনে চলে এবং পারমাণবিক অস্ত্র কেবল আত্মরক্ষার জন্য রাখে। বেইজিংয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পারমাণবিক যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয় এবং এটি চালানো উচিত নয়। তবে পেন্টাগন ও মার্কিন বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের কৌশলে সম্ভাব্য প্রথম ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বিশেষ করে যদি প্রচলিত সামরিক আক্রমণ কমিউনিস্ট শাসনের টিকে থাকার জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা যায়।
বুলেটিন অফ দ্য অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টসের মতে, চীন দ্রুত তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ করছে। বর্তমানে প্রায় ৬০০টি ওয়ারহেড রয়েছে, এবং ৩৫০টি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো ও রোড মোবাইল লঞ্চারের জন্য নতুন ঘাঁটি তৈরি হচ্ছে। পিপলস লিবারেশন আর্মির কাছে স্থলাভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য প্রায় ৭১২টি লঞ্চার রয়েছে, যার মধ্যে ৪৬২টি মহাদেশীয় যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে সক্ষম। ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের লক্ষ্য ১,০০০-এরও বেশি কার্যকরী পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরি করা।