‘বিশ্ব ক্রিকেট যত দূর এগিয়ে গেছে, বাংলাদেশ তাদের থেকে ততোটা পিছিয়ে গেছে। তবে পিছিয়ে পড়া বলাটা ঠিক শব্দ নয়। আমরা যদি সেই সাপোর্টটা দিতে পারি, তাহলে আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।’
গতকাল বুধবার কিংস অ্যারেনার ইনডোরে তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসাবে অনুষ্ঠিত ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটারদের বাছাই কার্যক্রমের শেষ দিনে উপস্থিত হয়ে কথাগুলো বলেন- জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অনুষ্ঠানমঞ্চে দাঁড়িয়েই জাতীয় দলের সিনিয়র এ ক্রিকেটার জানালেন, কাল আসতে পারেননি বিসিবির সঙ্গে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বৈঠক থাকায়। ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটারদের ট্রায়ালে অতিথি হয়ে যাওয়া মুশফিকের কাছে এদিনও প্রশ্ন করা হলো ওই বৈঠক নিয়েই। গত মঙ্গলবার রাজধানীর পাঁচ তারকা একটি হোটেলে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ নামে সে বৈঠকের আয়োজন করেছিল বিসিবি। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সবার আগে হাজির হয়েছিলেন জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিক। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বৈঠকের পর বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, ক্রিকেটাররা মন খুলে তাদের সমস্যার কথা বলেছেন।
ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটারদের বাছাই কার্যক্রমের অনুষ্ঠানে সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম ও সানোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ভার্চুয়ালি অংশ নেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট উইং চেয়ারম্যান আকরাম খান। আগের দিন বিসিবির সঙ্গে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বৈঠক থাকায় এই অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি মুশফিকুর। বিসিবির শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার সভায় নিয়ে তিনি বলেন, ‘ভালো উদ্যোগ। বাস্তবায়ন যত দিন না হবে, এসব বৈঠক ফলপ্রসু হবে না। আমরা তো ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ দিকে, আশা করব, পরের প্রজন্মের জন্য এ রকম পরিবেশ যেন তৈরি করে দিতে পারি, যাতে তারা নিয়মিত সব জায়গায় গিয়ে খেলতে পারে। ও রকম মাঠ যেন করে দিয়ে যেতে পারি, অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি।’
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মাঠে গড়াবে জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি, এরপর জাতীয় লিগের চার দিনের আসরও হবে। এই টুর্নামেন্টে খেলবেন কি না, জানতে চাইলে মুশফিক বলেছেন, ‘যদি কোনো দল নেয়, জাতীয় লিগে খেলার ইচ্ছে আছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সব দিক দিয়ে চেষ্টা করছি, এখন দেখা যাক।’ ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটারদের নিয়ে মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটাররা নিজেদের মানসিক অবস্থা সয়ে যেভাবে লড়াই করে খেলছে, তাতে তারা বাহবা পাওয়ার যোগ্য। এখান থেকে আমাদের মতো স্বাভাবিক মানুষদের অনেক কিছু শেখার আছে। তাদেরকে সহযোগিতা করা আমাদের অনেক বড় দায়িত্ব।
তাদেরকে উৎসাহ দেওয়ার মতো কিছু করে দিতে পারলেও শান্তি পাব। তাহলে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। তাদেরকে মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে যে, তারাও আমাদের মতো একজন মানুষ। এমন উৎসাহ পেলে তারা আরও ভালো খেলতে পারবে। বিসিবি সহযোগিতা করলে আরও বড় পরিসরে এগিয়ে যাবে ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট।’ ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ট্রায়াল ও সিলেকশন ক্যাম্পের দ্বিতীয় দিনে চারটি বিভাগ থেকে প্রায় শতাধিক ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটার অংশ নেন।