বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মানুষ হিসেবে আমরা রাষ্ট্র এবং সমাজে নিজেদের অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে, অন্য সব প্রাণীর অধিকার সংরক্ষণের ব্যাপারেও আমরা সতর্ক ও যত্নবান থাকব। সেই বিবেচনা থেকেই দেশের রাজনৈতিক ডামাডোলের বাইরে এসে পশুপাখী প্রেমী, প্রাণী প্রেমী কিছু মানুষের আয়োজনে আজকের প্রাণীবিষয়ক এই আলোচনাটি অবশ্যই অর্থবহ এবং অত্যন্ত ভালো একটি উদ্যোগ। সমাজে মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য মনুষ্যত্ব অর্জন আর পশুত্ব বর্জনই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
রাজধানীর শেরেবাংলানগরে অবস্থিত চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘প্রাণী ও প্রাণের মিলন মেলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর আয়োজন করে।
তারেক রহমান বলেন, দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে একজন মানুষ নাগরিক হিসেবে সব গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক অধিকার হারানোর কারণে অনেকের মনে হয়তো এক ধরনের অসহিষ্ণুতার জন্ম নিয়েছে। এই অসহিষ্ণুতা কাটিয়ে একজন মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার জন্য, মনুষ্যত্ব অর্জন আর পশুত্ব বর্জনই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সঙ্গে মানুষের অধিকারের সম্পর্কটা যেমন, বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে পশুপাখি এবং বন্যপ্রাণীর অধিকারের সম্পর্কটাও তেমন। সুতরাং রাষ্ট্র রাজনীতিতে গণতন্ত্র এবং শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে, বাস্তবিকভাবেই বাস্তুতন্ত্র নিরাপদ থাকে।
তিনি বলেন, এই দেশে ১ হাজার ৬০০টির বেশি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৯০টি প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে চলে গিয়েছে, এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের আরও অনেক দেশেই। মানুষের সৃষ্টি পরিস্থিতির কারণে অনেক প্রজাতির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন। বাংলাদেশের গর্ব, ঐতিহ্যের প্রতীক রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাঘও এখন মনে হয় বিলুপ্ত প্রজাতির তালিকায় খুব সম্ভব স্থান করে নিচ্ছে। যতটুকু মনে আছে, ৮০ দশকে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল সম্ভবত ৫ শর কাছাকাছি। সর্বশেষ জরিপে সেই বাঘের সংখ্যা কমতে-কমতে এখন ১০০টির কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। হাতির সংখ্যাও এখন কমে ২০০টির নিচে চলে এসেছে বোধহয়।
দেশের প্রত্যেকটা নাগরিককে জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মানুষ যখন প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করে, তখন এটা মানব সমাজের পরিপক্বতা এবং উন্নত নৈতিকতারই প্রতিফলন ঘটায়। সুতরাং মানুষ তার নিজের প্রয়োজনেই প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার। প্রাণীদের আবাস অক্ষত রাখা দরকার।