শান্তর শতকে দিনশেষে ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ

0
160

সকালের সূর্য কি সবসময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয়? হয়তো দেয়। তবে আজ দেয়নি। সূর্যের পূর্বাভাস সত্যি হতে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। তার মোড় ঘোরানো দারুণ ব্যাটিংয়ে শুরুতে হোঁচট খেয়েও পথ হারায়নি বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে ৩৬২ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করে টাইগাররা। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও রেখে দিয়েছে নিজেদের কাছে।

বুধবার মিরপুরে দেখা গেছে সবুজ ঘাসের নতুন পিচ। ভিন্ন অভিজ্ঞতা। পুরনো কেবল নাজমুল হোসেন শান্তের ব্যাটটা। যেই ছন্দে আছে গত কয়েক মাস ধরে, তা এবার টেনে আনলেন আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। যখন যেদিকে যেভাবে চাচ্ছিলেন, সেভাবেই খেলছিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে। কী দুরন্ত, দুর্দান্ত, অনবদ্য একটা ইনিংস! যদিও শেষটা আশানুরূপ হয়নি।

দ্বি-শতক সম্ভব ছিল, সুযোগও ছিল বেশ। অনেক অর্জনও হাতছানি দিয়ে ডাকছিল, নতুন কোনো রেকর্ড হয়তো গড়া হতো। তবে তা আর হলো কই! আমির হামজাকে তুলে মারতে গিয়ে শান্ত বাঁধা পড়লেন দেড় শ’ ছোঁয়ার আগে, ১৭৫ বলে ১৪৬ রান করে। তবে এর আগ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক-ঠাকই ছিল। ৫৮ বলে অর্ধশতক আর ১১৮ বলে শতক। বোঝাই যাচ্ছে কতটা সাবলীল ছিলেন মাঠে।

সিরিজের একমাত্র টেস্টে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শুরুটা অবশ্য আশানুরূপ হয়নি। ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকির হাসান, ফেরেন দ্বিতীয় ওভারেই; দলীয় রান তখন মোটে ৬। ফের যখন আফগানরা উইকেট উদযাপন করলো, ততক্ষণে মাঝে পেরিয়েছে ৪৩ ওভার! দলীয় রান ২১৮। বিশাল এই সময়টাজুড়ে মাহমুদুল হাসান জয়কে সাথে নিয়ে ইনিংসটা সাজান শান্ত।

শান্ত শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে থাকলেও জয়ের শুরুটা ছিল ধীরে-সুস্থে, দেখেশুনে। মাটি কামড়েই তুলে নেন অর্ধশতক। শতকেরও সুযোগ ছিল। তবে রহমত শাহের শিকার হয়ে ১৩৭ বলে ৭৬ রানেই থামে তার ইনিংস। সুবাদে ভাঙে শান্তের সাথে তার ২১২ রানের জুটি। যা দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

এরপর মুমিনুলকে সাথে নিয়ে আরো ৩৮ রান যোগ করেন তিনি। দলীয় ২৫৬ রানের মাথায় ফেরেন মুমিনুল, তার ব্যাটে আসে ১৫ রান। অতঃপর মুশফিককে সাথে নিয়ে ইনিংস বড় করার চেষ্টা করছিলেন, তবে আর ১৫ রান যোগ হতেই থামতে হয় তাকে। দেশের মাটিতে প্রথম শতক টেস্ট হাঁকিয়ে শান্ত ফেরেন ১৪৬ রানে। দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ২৭১।

এরপর লিটন দাসকে সাথে নিয়ে মুশফিক চেষ্টা করেন নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছেই রাখতে, কিন্তু মোটে ৯ রান করেই লিটন আউট হওয়ায় শঙ্কা দেখা সমর্থকদের মনে। ৭২ রানের মাঝে ৪ উইকেট হারানোয় মনে হচ্ছিলো হয়তো উল্টো স্রোত হয়তো বইতে শুরু হয়েছে, তবে তা আর হতে দেননি মুশফিক-মিরাজ জুটি।

মুশফিক ও মিরাজ মিলে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দারুণ ব্যাট করেছেন। দিনশেষেও অবিচ্ছিন্ন ছিল তাদের জুটি। এই দুজনের ব্যাটে ভর করে শেষ ১৫ ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। যদিও আফগানিস্তানের স্লো ওভার রেটের কারণে প্রথম দিনের খেলা শেষ হয় মাত্র ৭৯ ওভারে। মুশফিক ৬৯ বলে ৪১ ও মিরাজ অপরাজিত আছেন ৬৬ বলে ৪৩ রানে। দলের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩৬২।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here