টানা পাঁচ মাস গাজা উপত্যকায় অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এ অবস্থায় গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। এর পরই যুদ্ধবিরতি না মানলে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছেন কলম্বিয়া।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো এই হুমকি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কেও ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহŸান জানান।
আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘে ভোটের মাধ্যমে প্রস্তাব পাশের পর সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বলেন, অবশেষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়েছে। ইসরাইল এই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করলে আমি বিশ্বের দেশগুলোকে (ইসরাইলের সঙ্গে) কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
এর আগে সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইসলামিক পবিত্র মাস রমজানে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাব পাস করে। পবিত্র এই মাসটি মধ্যপ্রাচ্যে গত ১১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এবং আগামী ৯ এপ্রিল শেষ হতে পারে। কাউন্সিলের ১০ নির্বাচিত সদস্যের উপস্থাপিত এই রেজ্যুলুশনের পক্ষে ১৪টি দেশ ভোট দিয়েছে। এতে একমাত্র দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল। এ ছাড়া প্রস্তাবটির বিপক্ষে কোনো যুক্তি উপস্থাপন বা ভেটো ক্ষমতারও প্রয়োগ করেনি পরাশক্তি এই দেশটি।
এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের এই রেজুলেশনে ‘পবিত্র রমজান মাসের জন্য সকল পক্ষকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহŸান জানানো হয়েছে, যা পরে একটি স্থায়ী টেকসই যুদ্ধবিরতির দিকে পরিচালিত হবে।’
এই প্রস্তাবে ‘সমস্ত বন্দির অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির পাশাপাশি তাদের চিকিৎসা এবং অন্যান্য মানবিক চাহিদা পূরণের জন্য মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করার’ দাবিও করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেটো না দেওয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবারই প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিরতির আহŸান জানালো। যার অর্থ যুক্তরাষ্ট্র তার আগের অবস্থানে পরিবর্তন এনেছে। যদিও হোয়াইট হাউস বলেছে, ভেটো না দেওয়া বা ভোটদান থেকে বিরত থাকার মানে এই নয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন এসেছে।
তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের অবস্থান থেকে সরে আসা বা প্রস্থান বলে অভিহিত করেছেন। তার কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রেজুলেশন পাশের অনুমতি দেওয়ার মার্কিন এই সিদ্ধান্ত ‘যুদ্ধের শুরু থেকে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক অবস্থান থেকে স্পষ্ট পশ্চাৎপসরণ।’