আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় বিক্ষোভ সংঘর্ষে নিহত ১

0
35


আশুলিয়ায় মাসকট গার্মেন্ট ও রেডিয়েন্ট গার্মেন্টের শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক নারী শ্রমিক নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। নিহত শ্রমিকের নাম রোকেয়া বেগম। তিনি আশুলিয়ার জিরাবোর মাসকট গার্মেন্টের সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর। এদিকে গাজীপুরে বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। মহানগরের টঙ্গী, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা, চক্রবর্তী ও গাজীপুর সদরের শিরিরচালা এলাকায় এ বিক্ষোভ করা হয়। এতে মহাসড়কের বেক্সিমকো টঙ্গী থেকে জিরানি পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়।
সাভার ও আশুলিয়া (ঢাকা) : আশুলিয়ার জিরাবোতে মঙ্গলবার সকালে মাসকট গার্মেন্টের সামনে দুই কারখানার শ্রমিকদের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মাসকট গার্মেন্টের শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার বাইরে অবস্থান নেন। রেডিয়েন্ট গার্মেন্টের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। এ সময় রেডিয়েন্ট গার্মেন্টের কাজ বন্ধ করতে মাসকট কারখানার শ্রমিকরা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে দুই গার্মেন্টের শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ইটের আঘাতে মাসকট কারখানার রোকেয়া বেগম নিহত হন। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোকেয়া গাইবান্ধা জেলার সদর থানার গুদারহাট এলাকার মাসুদ রানার স্ত্রী। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, শিল্প পুলিশসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজীপুর : গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী, কালিয়াকৈরের চন্দ্রা, চক্রবর্তী ও জয়দেবপুরের শিরিরচালায় মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। আন্দোলন নিরসনে দাবিদাওয়ার বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ। গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন কারখানার শ্রমিকরা। সকালে চন্দ্রা এলাকায় মাহমুদ জিন্স লিমিটেড ও নায়াগ্রা টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। অপরদিকে চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন বেক্সিমকো গ্রæপের শ্রমিকরা।
এদিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন শিরিরচালা এলাকার এক্সিকিউটিভ হাই ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, কারখানাটিতে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক আছে। ইতঃপূর্বে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিদাওয়া কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করেন। সোমবার রাত ১০টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা কারখানার আয়রনম্যান মো. আরমানকে মারধর করে মানিব্যাগ ও মোবাইল কেড়ে নেয়। শ্রমিকদের সন্দেহ, দাবি উপস্থাপন করায় কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাদের লোকজন দিয়ে আরমানকে মারধর করেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করছে।
অপরদিকে, টঙ্গীর খাঁপাড়া এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সিজন ড্রেস নামের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। এ সময় শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অপরদিকে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বেতন বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন তাসমিয়া হারবাল লিমিটেডের শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালে তাদের কর্মবিরতি শুরু হয়। এ সময় তারা কারখানার ভেতরে হইচই করে। এদিকে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে নয় দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন ভেরিতাস ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেডের শ্রমিকরা।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২-এর সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, টঙ্গীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সিজন ড্রেস কারখানার শ্রমিকরা। বেতনভাতা পরিশোধে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here