ইমরান খানের বিচার কি সামরিক আদালতেই? যা বলছে ব্রিটেন

0
13

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সামরিক আদালতে বিচার করার পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়।
স¤প্রতি ইমরান খানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা জুলফিকার বুখারি লেবার পার্টির এমপি কিম জনসনকে একটি চিঠি লিখেছেন। এতে ইমরান খানকে সামরিক আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তুলে ধরা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিম জনসনসহ ব্রিটেন পার্লামেন্টের প্রায় ২০ এমপি দেশটির পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামির কাছে জানতে চান, গণতান্ত্রিক বিষয় সামরিক আদালতে কেনো তোলা হবে। এ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য চান তারা।
২০ এমপির এই দল ইমরান খানের মুক্তির জন্য চাপ দেওয়ার জন্য ল্যামিকে অনুরোধ করেন। এতে তার আটককে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করা হয়। তাদের আশঙ্কা, ইমরান খান সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন, আর এই ধরনের পদক্ষেপকে বেআইনি।
গত কয়েকমাসের মধ্যে সেনা আইনের সংশোধনী এবং সাবেক গোয়েন্দা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ফয়েজ হামিদের গ্রেপ্তারের পর ইমরান খানের সম্ভাব্য সামরিক বিচার নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ৯ মে সহিংস বিক্ষোভে তার বিরুদ্ধে নথিভুক্ত করা মামলার বিষয়ে সম্ভাব্য সামরিক বিচারের বিরুদ্ধে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
অবশ্য এক শুনানিতে, ফেডারেল সরকার আদালতকে জানিয়েছিল যে সামরিক আদালতে খানের বিচার তাদের বিবেচনাধীন নয়। কিন্তু এরপরও সংশয় থেকে যাচ্ছে।
কারণ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স¤প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে, যেগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তার বিচার সামরিক আদালতে হবে। তবে কী প্রমাণ, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি তিনি।
ল্যামি বেসামরিক বিচারের জন্য সামরিক আদালতের সম্ভাব্য ব্যবহারের বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং স্বাধীন তদারকির অভাবকে তুলে ধরেন।
১১ নভেম্বর এক পৃষ্ঠার চিঠিতে, লিভারপুল রিভারসাইডের লেবার এমপি কিম জনসনকে সম্বোধন করে ডেভিড ল্যামি বলেন, যদিও পাকিস্তানের বিচারিক প্রক্রিয়াগুলি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা খুব স্পষ্ট বলেছি যে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে তাদের আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান, ন্যায্য বিচারের অধিকার, যথাযথ প্রক্রিয়া এবং মানবিকতা নিশ্চিত করতে হবে।
যদিও তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন, ইমরানের খানের সামরিক বিচারের মুখোমুখি হওয়ার কোনও ইঙ্গিত নেই। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিব জোর দিয়ে বলেছেন, তার কর্মকর্তারা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করবেন।
ল্যামি আরো বলেন, পাকিস্তানকে গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের গুরুত্বের উপর জোর দিতে বলেছেন। এটি ইমরান খানের মামলার ক্ষেত্রেও যেমন প্রযোজ্য, সমস্ত পাকিস্তানের নাগরিকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিবের এই বক্তব্য আপাতত পিটিআইয়ের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বর্তমানে বেশ কয়েকটি মামলায় গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে বন্দি আছেন ইমরান খান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here