ঢাকা ডেস্ক : নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সোমবার বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তাকে নেওয়া হয়। এরপর এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড তাকে ভর্তি না করিয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এর আগে ২২ আগস্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পর ২৮ আগস্ট ফের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করানো হয়। দুদিন হাসপাতালে থাকার পর ৩১ আগস্ট বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন পর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে-এমন খবরে সোমবার দুপুর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার গুলশানের বাসার সামনে জড়ো হতে থাকেন। বাসার সামনে এবং আশপাশের সড়কে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যও। বিকাল সোয়া ৪টায় বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া। প্রিয় নেত্রীকে একনজর দেখার জন্য সেখানেও ভিড় করেন নেতাকর্মীরা। চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে হাসপাতালের সামনের সড়কে মিছিল করেন তারা। দেন সরকারবিরোধী নানা স্লোগান। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দেয় খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। পৌঁছে সোয়া ৮টায়। তার গাড়ির সামনে-পেছনে ছিলেন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। পুরো সময় তারা তাকে কর্ডন করে রাখে।
খালেদা জিয়া বাসায় পৌঁছার পর সেখানে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে এভারকেয়ার হাসপাতালে চেয়ারপারসনকে নেওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের যেসব পরীক্ষা করা দরকার, সেগুলো করা হয়েছে। ওই পরীক্ষার রিপোর্ট কাল পাওয়া যেতে পারে। এরপর চিকিৎসকরা বসে পরবর্তী সময়ে ম্যাডামের চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসার ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।’
বর্তমানে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আগের মতোই আছেন। শারীরিক অবস্থা আগের মতো আছে। অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্মমহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্ববায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম জাহাঙ্গীর, মামুন হাসান, মাহবুবুল হাসান ভুঁইয়া পিংকু, ইসহাক সরকার, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
১০ জুন গভীর রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হার্টে একটি রিং বসানো হয়। হার্টের দুটো ব্লক এখনো রয়ে গেছে।
খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তার। কারাগার থেকে বেরোনোর পর চিকিৎসার জন্য কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।