নিউইয়র্কে ‘হিমাঙ্কের নিচে কবিতার উষ্ণতায়’ ঊনবাঙাল সভা অনুষ্ঠিত

0
23

“মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত কবিতা” – এই থিমের ওপর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয় ঊনবাঙালের ৪৬তম সাহিত্যসভা। নির্ধারিত বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন সমকালীন বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ কবি কাজী জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। এ ছাড়াও ঢাকা থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বিজয় দিবসের মাসে অনুষ্ঠিত এই সভায় বাড়তি মাত্রা যোগ করেন। অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন নাট্যজন মুজিব বিন হক, ডাক্তার ও সাহিত্যানুরাগী মুশফিক চৌধুরী, পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট রওশন হক।

ঊনবাঙালের প্রথা অনুযায়ী এ-মাসের জন্য নির্বাচিত আবৃত্তি শিল্পী আহসান হাবিব, জিএম ফারুক খান এবং দিমা নেফারতিতি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। এ-মাসের নির্বাচিত কবি সুমন শামসুদ্দিন পড়ে শোনান তার রচিত ৩টি মুক্তিযুদ্ধের কবিতা। এ-ছাড়া স্বরচিত কবিতা পড়েন সোহেল হামিদ, এস এম মোজাম্মেল হক, মোঃ নজরুল ইসলাম, ইশরাত মিতা, রেণু রোজা, সৈয়দ রাব্বী। নিজেদের লেখা গল্প ও মুক্ত গদ্যাংশ পাঠ করেন কাওসার পারভীন চৌধুরী এবং ইমাম চৌধুরী। আবৃত্তি করেন আদিত্য শাহীন, মুন্না চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন প্রমূখ।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে মোঃ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুটি দেশের গান পরিবেশন করেন ঊনবাঙালের সদস্যরা। এতে অংশ নেন সোহানা নাজনীন, ফরিদা ইয়াসমিন, চমক ইসলাম, ইশরাত মিতা, মোজাম্মেল হক, সৈয়দ রাব্বী, সুমন শামসুদ্দিন, কাওসার পারভীন চৌধুরীসহ আরো অনেকে।

কাজী জহিরুল ইসলাম তার থিমেটিক বক্তব্যে অ্যালান গিন্সবার্গ, জর্জ হ্যারিসন, জোয়ান বায়েজের নাম উল্লেখ করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর রচিত গান ও কবিতার জন্য। তিনি বলেন গিন্সবার্গের কবিতা “সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড” এবং জর্জ ও জোয়ানের “বাংলাদেশ” গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আন্তর্জাতিক কম্যুনিটির সমর্থম জুগিয়েছে। বাংলাদেশী কবিদের প্রায় সকলেই মুক্তিযুদ্ধের ওপর কবিতা লিখেছেন। তিনি উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতা ও কবিদের নাম উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, এখন আমরা যারা কবিতা লিখছি এবং শিল্প-সাহিত্যের চর্চা করছি, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ হতে হবে, বিজয়ের মাসে এটিই হোক আমাদের অঙ্গীকার। আবু জাফর মাহমুদ তার ভাষণে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন, তিনি বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের শত্রু কে তা চিহ্নিত করে বাকী পৃথিবীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে। ঊনবাঙালের ঐক্য এবং প্রত্যয়ের তিনি প্রশংসা করেন। মুজিব বিন হক বলেন, আমরা সব সময় একজন বীরের প্রতীক্ষায় থাকি, এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, সবাইকেই বীর হয়ে উঠতে হবে। 

অতিথিরা, সদস্যরা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যাওয়া তাপমাত্রাকে তুচ্ছ করে নিজ হাতে তৈরি করা  সুস্বাদু খাবারের পশরা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ঊনবাঙাল সভার এই কাব্যিক মিলনমেলায়। শুদ্ধ শিল্পের নিবিড় চর্চা – ঊনবাঙালের এই স্লোগানে মোড়া কাব্যিক উষ্ণতা বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঊষ্ণ রাখে অভ্যাগত সবাইকে। এখন থেকে ঊনবাঙাল সভা ব্যবস্থাপনা কমিটি সভা আয়োজনের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন মোঃ নজরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম চৌধুরী, সদস্যসচিব সুমন শামসুদ্দিন, সদস্য হিসেবে থাকবেন সৈয়দ ফজলুর রহমান, রওশন হক, সৈয়দ রাব্বী এবং কাওসার পারভীন চৌধুরী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here