ব্যাংক লুটেরাদের জন্য কঠিন হুঁশিয়ারি

0
15
ব্যাংক লুটেরাদের জন্য কঠিন হুঁশিয়ারি
ব্যাংক লুটেরাদের জন্য কঠিন হুঁশিয়ারি
পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার আমলের গত ১৬ বছরে যারা ব্যাংকের টাকা লোপাট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা এসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, গত ১৬ বছরে ব্যাংকের টাকা লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউই ছাড় পাবে না।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা-বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষৎকারে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আপনারা দেখেছেন এরই মধ্যে ব্যাংকের টাকা লোপাটকারীদের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরকেও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাতের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওনাকে এখন অন্য মামলায় আটক করা হয়েছে। কিন্তু অচিরেই তার আর্থিক অনিয়মের বিষয়েও মামলা হবে।
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বারকাত সাহেবের আমলে জনতা ব্যাংক থেকে যেসব লোন হয়েছে, সেগুলো সরকারের বিবেচনায় আছে। প্রত্যেকটি টাকার হিসাব নেওয়া হবে। যাদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আর্থিক খাতে বিশাল অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু জনতা ব্যাংক নয়, অন্য সব ব্যাংকের বিষয়েও সরকারের নজরে আছে। সময়মতো জাতিকে সব বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জানান, আর্থিক খাতের অনিয়মের মামলা করতে অনেক ডকুমেন্ট দরকার হয়। হুট করে করা যায় না। তাই টাকা পাচার বা টাকা লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের এখন অন্য মামলায় আটক করা হলেও অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে যাচাই করা তথ্যের ভিত্তিতে টাকা আত্মসাতের মামলা করা হবে।
টাকা পাচার রোধে বর্তমান সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স চুক্তি করছে বলেও জানান আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন আইন করে যাব, যাতে আগামীতে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করতে গেলে দশবার চিন্তা করবে। কারণ, তারা কেউই রেহাই পাবে না। কোনোভাবেই তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি এ ব্যাপারে কাজ করছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
আনিসুজ্জামান বলেন, ‘গত ১৬ বছরে বাংলাদেশ থেকে যত টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে- তা যে দেশেই হোক না কেন, তা ফিরিয়ে আনার সব প্রকার জোর প্রচেষ্টা চলবে। তবে এক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশের সঙ্গে আমাদের আলাদা চুক্তি করতে হচ্ছে। এ জন্যই একটু সময় লাগছে।’
তিনি আরও জানান, সুইজারল্যান্ড, আবুধাবি, কাতার, দুবাই, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, কানাডা ও যুক্তরাজ্য তথা লন্ডনসহ প্রতিটি দেশের আইন-কানুন আলাদা। কোনো কোনো দেশে টাকা পেয়ে পাচারকারীদের নাগরিকত্ব অথবা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য যারা টাকা পাচার করেছে, তাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ এক্ষেত্রে তাদের আইন-কানুনের দোহাই দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই টাকা ফেরত দিতে চাইছে না।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ হাতিয়ার হলো আমাদের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্তর্জাতিকভাবে তার একটি উচ্চতর সম্মান ও মর্যাদা রয়েছে। এ কারণে তিনি যখন বাংলাদেশ নিয়ে কোনো সহায়তা চাইবেন, কোনো দেশ তা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না। এটাই আমাদের বড় অস্ত্র। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার আর্থিকভাবে সফলতার দ্বারপ্রান্তে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আরও বলেন, কোনো দেশে বিপ্লবের কারণে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে সেখানে জিডিপি পড়ে যায়, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে আমাদের দেশে তা হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here