এআইয়ের কবলে হানিফ সংকেত, নিচ্ছেন আইনি ব্যবস্থা

0
19
এআইয়ের কবলে হানিফ সংকেত, নিচ্ছেন আইনি ব্যবস্থা
এআইয়ের কবলে হানিফ সংকেত, নিচ্ছেন আইনি ব্যবস্থা

নব্বই দশক থেকে শুরু করে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মানুষকে বিনোদন দিয়ে যাচ্ছেন হানিফ সংকেত। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে প্রতিনিয়তই মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। কোনো পণ্যের সঙ্গে নিজের নাম কিংবা কণ্ঠও মেলাননি। কিন্তু এবার সেই কণ্ঠই ব্যবহার হলো একটি ভুয়া বিজ্ঞাপনচিত্রে। সেটিও আবার আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন হানিফ সংকেত।

গত ২০ মে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বরেণ্যে এ ব্যক্তি লেখেন, ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি এর অপব্যবহারের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, প্রযুক্তিগত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। বর্তমান সময়ের সেরা আবিষ্কার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), যা মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রদর্শন করতে পারে। তবে এর অপব্যবহারের ফলে ঘটছে অনেক অঘটনও। যার কারণে অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন, বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’

তিনি লিখেছেন, ‘গত কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করছি, একটি প্রতারক চক্র ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ইত্যাদিতে আমার উপস্থাপনার অংশ ব্যবহার করে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। তবে এআই কৃত্রিমভাবে যত সূক্ষ্মতার পরিচয়ই দিক না কেন, একটুখানি লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে এটা আসল নয়, নকল। আমার কণ্ঠ অনুকরণ করলেও উপস্থাপনায় বাংলা উচ্চারণ ভিনদেশের।’

এরপরই নিজের নির্লোভ ও নীতিনিষ্ঠার জানান দেন হানিফ সংকেত। এ ব্যাপারে লেখেন, ‘অনেক প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও আমি কখনোই কোনো বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশগ্রহণ করিনি। সুতরাং আমাকে ব্যবহার করে এ ধরণের এআই কিংবা প্রযুক্তিনির্ভর কোনো বিজ্ঞাপন দেখে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। কারণ, এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যারা এ ধরণের প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

এছাড়া এআই-এর অপব্যবহার ঠেকাতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হুমকি থেকে নিজেদের সৃষ্টিকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য ব্রিটিশ তারকারা কপিরাইট আইন হালনাগাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে সংগীতশিল্পী ডুয়া লিপা, এলটন জন, নাট্যকার ডেভিড হেয়ার, নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক কাজুও ইশিগুরোর মতো ব্যক্তিত্বরাও রয়েছেন।’

সবশেষ সফটওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মনে হয় এআই সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের উচিত কিছু নীতিমালা তৈরি করা, যাতে কেউ এর অপব্যবহার করতে না পারে।’

প্রসঙ্গত, আশির দশক থেকে দর্শকদের ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিনোদন দিয়ে আসছেন হানিফ সংকেত। অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন অবক্ষয় তুলে ধরেন পর্দায়। সঙ্গে জুড়ে দেন সচেতনবার্তাও।

হানিফ সংকেত একাধারে একজন লেখক, উপস্থাপক, পরিচালক ও প্রযোজক। তবে ইত্যাদি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দর্শকমহলে তারকা উপস্থাপক হিসেবেই খ্যাতি লাভ করেছেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here