যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় শীর্ষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই ঘোষণা দিয়েছেন, যা পরে ক্রেমলিন থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
ট্রাম্প শুক্রবার হোয়াইট হাউসে বলেন, “এই যুদ্ধে সাড়ে তিন বছর ধরে লড়াই চলছে। অনেক রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রাণ হারিয়েছে। এটি জটিল, তবে আমরা কিছু ভূখণ্ড ফিরিয়ে আনব, কিছু অদলবদল করব। উভয় পক্ষের জন্যই এটি ভালো হবে।” তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই বৈঠকে ভূখণ্ড বিনিময়ের মাধ্যমে শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।
সিবিএস নিউজের বরাতে জানা গেছে, হোয়াইট হাউস ইউরোপীয় নেতাদের একটি সমঝোতায় রাজি করানোর চেষ্টা করছে। এতে রাশিয়া দনবাস অঞ্চল ও ক্রাইমিয়ার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারে, তবে খেরসন ও ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিন ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে মস্কোতে একই ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভূখণ্ড বিনিময়ের যেকোনো শর্ত প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তিনি এবং ইউরোপীয় নেতারা এই প্রস্তাবে সম্মত হবেন কিনা, তা এখনও অস্পষ্ট। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৈঠকে জেলেনস্কিকে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলছে, যাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। ইস্তানবুলে তিন দফা আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর এই বৈঠক নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আলাস্কা বৈঠকের জন্য ‘যৌক্তিক’ স্থান এবং ট্রাম্পকে দ্বিতীয় বৈঠকের জন্য রাশিয়ায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে, পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র এটি স্বীকার করে না, যা এই বৈঠক সম্ভব করছে।
ট্রাম্প আশাবাদী যে, ত্রিপক্ষীয় শান্তিচুক্তির মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান সম্ভব। তিনি বলেন, “ইউরোপীয় নেতারা, পুতিন ও জেলেনস্কি সবাই শান্তি চান। আমরা জেলেনস্কিকে তার প্রয়োজনীয় সবকিছু দেব, যাতে তিনি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন।”