বসন্তের মৃদু উষ্ণতায় ধীরে ধীরে যখন প্রকৃতি জেগে ওঠে, তখন চীনের প্রধান শস্য উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোতে জোর কদমে শুরু হয় বসন্তকালীন কৃষিকাজ। জমি চাষ, বীজ রোপণ, চারা প্রতিস্থাপন ও সেচের মাধ্যমে গ্রীষ্ম ও শরৎকালের ফসল ঘরে তোলার শক্তপোক্ত আয়োজনটা চোখে পড়ার মতো।
চীনের বিভিন্ন শস্য উৎপাদন এলাকায় বসন্তকালীন চাষাবাদ পুরোদমে চলছে। চিয়াংশি প্রদেশের নানচাং শহরে আধুনিক কৃষিযন্ত্র ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রাথমিক ধান রোপণ ও সেচ কাজ দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে। এ শহরে ২৫টি চারা উৎপাদন কেন্দ্র ও ৬৯টি কৃষিসেবা প্রতিষ্ঠান কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছে। শানতোং প্রদেশেও ৪০ লাখ হেক্টর গমক্ষেতে নতুন সেচ প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে। যন্ত্রচালিত এসব চাষাবাদে কমছে খরচ, বেঁচে যাচ্ছে সময় এবং বাড়ছে ফলনের মান ও পরিমাণ।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় চিয়াংসি প্রদেশের নানছাং শহরে ১ লাখ ৩০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আগাম ধান চাষ চলছে পুরোদমে। এ বছর বসন্তকালীন চাষে শহরজুড়ে ৩৭ হাজার ৮০০ সেট আধুনিক কৃষিযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এখানকার ছাংইয়ি টাউনশিপের ধানচাষিরা আধুনিক রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার চালিয়ে সমতল ধানক্ষেতে পার করছেন ব্যস্ত সময়।
নানছাংয়ের কৃষি কর্তৃপক্ষ নতুন প্রযুক্তি, উন্নত বীজ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। চাষিদের জন্য আরও উন্নত পরামর্শ ও সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন।
নানছাং কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ কেন্দ্রের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিভাগের উপপ্রধান সুয়ে ছিয়াং জানালেন, ‘এ বছর বসন্তকালীন চাষে আমরা ২৫টি মানসম্পন্ন চারা উৎপাদন কেন্দ্র ও ৬৯টি কৃষিসেবা সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করেছি। চাষিদের জন্য বীজতলা তৈরি, চাষ, রোপণ, সার প্রয়োগ ও কীটনাশক ব্যবস্থাপনার ধারাবাহিক সেবা নিশ্চিত করেছি।’
চীনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি অঞ্চল শানতোং প্রদেশে ৪০ লাখ হেক্টরের বেশি গমক্ষেত এখন জয়েন্টিং পর্যায়ে রয়েছে। এই প্রদেশের সব শস্য উৎপাদনকারী এলাকাগুলোতেও নতুন সেচ প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
শানতোংয়ের ১৫৫টি এলাকায় বসন্তকালীন সেচ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ২১২ কোটি ঘন মিটার পানি সরবরাহ করা হয়েছে, যা ২০ লাখ হেক্টর জমি সেচে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এতে করে গত বছরের চেয়েও বেশি ফলনের আশা করছেন চাষিরা। সেইসঙ্গে এই বছর ড্রোনসহ আরও আধুনিক কৃষিযন্ত্র ও প্রযুক্তির ব্যবহার গতি এনেছে সেচের কাজে।