স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের খাদ্যতালিকায় কুমড়ার বীজ এখন বেশ জনপ্রিয়। বিকেলের নাশতা, সকালের ওটস কিংবা অফিসের স্ন্যাকস—সব জায়গাতেই জায়গা করে নিয়েছে এই বীজ। পুষ্টিগুণে ভরপুর কুমড়ার বীজে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান, যা শরীরের জন্য উপকারী।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকারী হলেও কুমড়ার বীজ সবার জন্য সমানভাবে নিরাপদ নয়। কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এটি খেলে উপকারের বদলে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক সর্বোচ্চ ২৮ থেকে ৩০ গ্রাম কুমড়ার বীজ খেতে পারেন। এর বেশি খেলে হজমজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষ করে যাদের কিডনি বা লিভারের জটিলতা রয়েছে, তাদের জন্য কুমড়ার বীজ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এসব রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের বীজ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
অতিরিক্ত কুমড়ার বীজ খেলে গ্যাস, পেট ভারী লাগা কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ এতে উচ্চমাত্রার ফাইবার রয়েছে। একই সঙ্গে এতে থাকা ফ্যাটি এসিড ও তেল অনেকের জন্য হজমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কুমড়ার বীজে ক্যালরি তুলনামূলক বেশি থাকায় অতিরিক্ত খেলে ওজন কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া কুমড়ার বীজ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। তাই যাদের আগে থেকেই লো ব্লাড প্রেসার রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত নয়।
কিছু মানুষের কুমড়ার বীজে অ্যালার্জিও দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পেটব্যথা, মাথাব্যথা, ত্বকে চুলকানি বা র্যাশের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, শিশুদের কুমড়ার বীজ খাওয়ানো উচিত নয়। এতে থাকা ফাইবার ও ফ্যাটি এসিড শিশুদের পেটে ব্যথা বা হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
সব মিলিয়ে, কুমড়ার বীজ উপকারী হলেও পরিমিত ও সঠিকভাবে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ। যেকোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পর এটি খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত।




