নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি যে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়, স্বচ্ছ নয়। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের যেভাবে কাজ করার কথা ছিল সেটি তারা করছে না। আমরা বলেছি যে, কিছু দলের প্রতি নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাত রয়েছে, কিছু দলের প্রতি তারা বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। তারা কীভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে সেসব বিষয়ও আমরা বুঝিয়ে বলেছি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
শাপলা প্রতীক নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কথা বলছিলেন এনসিপির নেতারা। বিশেষ করে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ না পাওয়ার দায় নির্বাচন কমিশনকে দিচ্ছে। এনসিপির নেতাদের দাবি, কমিশন প্রভাবিত হয়ে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দিচ্ছে না।
বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ পুরো পরিবর্তনের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করে নাহিদ ইসলাম বলেন, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বললে তাদের দুরভিসন্ধি রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা এবং দক্ষতা নিশ্চিত করা লাগবে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। সে দাবির সঙ্গে ভিন্নমত নেই। কিন্তু এই উপদেষ্টা পরিষদ পুরো পরিবর্তন করতে হবে, এটার আসলে সুযোগ নেই।’
জুলাই সনদ স্বাক্ষরের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদের কাগজে মূল্যে আমরা বিশ্বাসী নই। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সেটার নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই এনসিপি স্বাক্ষর করবে। সে ক্ষেত্রে আমরা সাংবিধানিক একটি আদেশের কথা বলেছি। যে আদেশটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন।’
তিন দাবির বিষয়ে মনে করিয়ে দিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, ‘জুলাই সনদের আদেশ শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন, নোট অব ডিসেন্টের কোনো কার্যকারিতা থাকবে না ও গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে- এই তিনি দাবি বিবেচনা করলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব।’
জুলাই সনদ নিয়ে প্রস্তাবিত বিষয়গুলো ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করবেন বলে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন বলেও জানান এনসিপির আহ্বায়ক।
জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সদস্যদের আদালতে আনা হয়েছে, এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা একটি ধাপ এগিয়েছি। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি সারাদেশে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনের আগে বিচারের রোডম্যাপ দেওয়ার দাবির কথাও জানান নাহিদ ইসলাম।
বিকেল ৫টায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে যমুনায় যান এনসিপির চার নেতা। নাহিদ ইসলাম ছাড়াও প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ।