খুন হওয়ার আগমুহূর্তে শ্বশুরকে আসতে বলেন হাবিবা

0
20
খুন হওয়ার আগমুহূর্তে শ্বশুরকে আসতে বলেন হাবিবা
খুন হওয়ার আগমুহূর্তে শ্বশুরকে আসতে বলেন হাবিবা

বগুড়ায় খুন হওয়ার আগমুহূর্তে সাহায্য চেয়ে শ্বশুর বুলবুল আহম্মেদ প্রামাণিকের (৪৫) মুঠোফোনে কল করেছিলেন গৃহবধূ উম্মে হাবিবা (২০)। শ্বশুরকে দ্রুত বাড়িতে যেতে বলেছিলেন তিনি। তবে এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মুঠোফোনে আর্তচিৎকার ও কান্নার আওয়াজ শুনতে পান বুলবুল। এরপর বাড়ি ফিরে দেখেন, পুত্রবধূ হাবিবার সঙ্গে খুন হয়েছেন মা লাইলী বেওয়া (৬৫)। আর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়ে কাতড়াচ্ছে তাঁর স্কুলপড়ুয়া মেয়ে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া শহরের ইসলামপুর হরিগাড়ি পশ্চিমপাড়ার এলাকার নিজ বাড়িতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন বুলবুল আহম্মেদ প্রামাণিক। ওই সময় সেখানে হাবিবা ও লাইলীর মরদেহ আনা হয়। এর আগে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশ দুটির ময়নাতদন্ত করা হয়।

পরিবারের দাবি, প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না পেয়ে গত বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ওই কিশোরীর বাড়িতে যায় সৈকত আহমেদ (১৮) নামের এক তরুণ। সেখানে গিয়ে স্কুলপড়ুয়া ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন সৈকত। এ সময় রক্ষা করতে গেলে তাঁর দাদি লাইলী ও ভাবি হাবিবাকে ছুরি মেরে পালিয়ে যান সৈকত। ওই সময় মহল্লার পৌরটোপা বটতলা এলাকায় নিজ মুদিদোকানে বেচাবিক্রি করছিলেন বুলবুল আহম্মেদ। দোকানে তাঁর সঙ্গে স্ত্রী পারভীন আক্তারও ছিলেন। একপর্যায়ে রাত ৮টা ৩৮ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে বুলবুল আহম্মেদের মুঠোফোনে কল করেন হাবিবা।

এরপর আর কারও জবাব মেলেনি। দ্রুত বাড়ি ছুটে যান তিনি। দেখেন, এক পাশে পড়ে আছেন তাঁর মা এবং বউমার রক্তাক্ত লাশ। অন্য পাশে রক্তাক্ত জখম হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে তাঁর মেয়ে। বাড়ি ঢুকতেই দেখেন রক্তমাখা চাকু হাতে দৌড়ে পালাচ্ছেন সৈকত হোসেন। এ সময় সৈকতের সঙ্গে অন্য লোকও ছিল।

পুলিশ জানায়, ওই কিশোরীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন সৈকত। তিনি ইসলামপুর হরিগাড়ি মহল্লার বাসিন্দা ও সোহেল সাখিদারের ছেলে ও একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এলাকায় বখাটে হিসেবে তাঁর পরিচিতি আছে।

অভিযুক্ত সৈকতকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, সৈকত মাদকাসক্ত ও বখাটে ছিল বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ দাফন করা হয়।

এদিকে ওই কিশোরী বর্তমানে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালটির উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ জানান, অস্ত্রোপচার শেষে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here