রাজধানীর বুয়েটসংলগ্ন পলাশী গোলচত্বরে শহিদ আবরার ফাহাদের স্মরণে নির্মিত ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ উদ্বোধন করা হয়েছে। ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করেছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আনুষ্ঠানিকভাবে স্তম্ভটির উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আট স্তম্ভের অবয়বের চেয়ে এর ওপর লেখা শব্দগুলোই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এই শব্দগুলোর বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই এই বদ্বীপের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের সময়ে হাজার কোটি টাকায় নানা প্রকল্প হলেও এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী উদ্যোগ নিলেই ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হতে হয়। অথচ এই স্তম্ভ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, আবরার ফাহাদের স্মৃতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সরকার উদ্যোগ নেবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, আবরার ফাহাদ কেবল একজন ব্যক্তি নয়, একটি চেতনা ও আদর্শ। ২০১৯ সালে তিনি যে বীজ বপন করেছিলেন, তা আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে।
‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’-এর প্রতিটি অংশে দেশের সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, গণপ্রতিরক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, দেশীয় শিল্প–কৃষি–নদী–বন–বন্দর রক্ষা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদার মতো মূল্যবোধ তুলে ধরা হয়েছে।
২০১৯ সালে আগ্রাসনবিরোধী অবস্থানের কারণে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শহিদ আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার সদস্যরা।
আবরারের স্মৃতি ও চেতনা অমলিন রাখতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন “শহিদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি স্মরণে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ নির্মাণ ও পলাশী ইন্টারসেকশন উন্নয়ন প্রকল্প”-এর আওতায় এই স্মারকটি নির্মাণ করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, বুয়েটের উপ–উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, শহিদ আবরারের পিতা মো. বরকত উল্লাহ ও ভাই আবরার ফাইয়াজ প্রমুখ।