জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলার সমর্থনই তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে।’
সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন নাহিদ। এ সময় তিনি সেসব উপদেষ্টাদের নাম প্রকাশেরও হুঁশিয়ারি দেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককেই বিশ্বাস করা আমাদের ভুল হয়েছে। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। আমরা নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলকে যে বিশ্বাস করেছিলাম বা তাদের ওপর আস্থা রেখেছিলাম সেই জায়গায় আমরা আসলে প্রতারিত হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, অথবা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সময় আসলে তাদের নামও আমরা উন্মুক্ত করবো।’
উপদেষ্টার আসনে ছাত্রনেতারা বসার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘আমরা কেউই সরকারের উপদেষ্টা পদে যেতে চাইনি। জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। তাহলে কিন্তু ছাত্রদের এই দায়িত্ব পালন করা লাগতো না। যদি অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকতো, তাহলে এই সরকার তিন মাসও টিকতো না।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকারকে উৎখাত করার, প্রতিবিপ্লব করার চেষ্টা চলমান ছিল প্রথম ছয় মাস। এখনও আছে কিছুটা। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্মত হয়ে নাগরিক সরকার করতো, তাহলে কিন্তু ছাত্রদের কাঁধে এ দায়িত্ব আসতো না। সময়ের প্রয়োজনে এ দায়িত্ব আমাদের নিতে হয়েছিল।’
উপদেষ্টাদের অনেকে সেফ এক্সিট নিয়ে এখনই ভেবে রেখেছেন বলেও দাবি করেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টারা অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে বা পোহাতে হবে। তারা যদি বিশ্বাস করতেন যে, তাদের নিয়োগ কর্তা গণঅভ্যুত্থানের শক্তি, এ দেশের সাধারণ মানুষ যারা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন— তাদের ওপর ভরসা রাখতেন, তাহলে উপদেষ্টাদের এই বিচ্যুতি হতো না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টে সেজদা দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা, ছাত্ররা নয়।’
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন না করে, জাতীয় সরকার গঠন করলে আক্ষেপ তৈরি হতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।