৫ আগস্টের আগে আপনাদের এই হিম্মত কোথায় ছিল, প্রশ্ন হাসনাতের

0
17
৫ আগস্টের আগে আপনাদের এই হিম্মত কোথায় ছিল, প্রশ্ন হাসনাতের
৫ আগস্টের আগে আপনাদের এই হিম্মত কোথায় ছিল, প্রশ্ন হাসনাতের

সরকারি কাজে বাধা দিলে বা হুমকি দিলে জনগণ কর্মচারীদের বিকল্প খুঁজে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সরকারি চাকরি আইন সংশোধন নিয়ে চলমান বিক্ষোভ এবং এনবিআর সংস্কারের বিরুদ্ধে কর্মীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় ৫ আগস্টের আগে তাদের এই হিম্মত কোথায় ছিল বলেও প্রশ্ন রাখেন তিনি।

সোমবার (২৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বিপ্লব উদ্যান থেকে উত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় এনসিপির পথসভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “এখন সচিবালয়েও দেখলাম আন্দোলন হচ্ছে, বিক্ষোভ হচ্ছে। এনবিআর সংস্কারেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “যখন জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলছিল, আপনারা কিন্তু কালো ব্যাজ ধারণ করে শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়ে অফিস করেছেন। এখন আপনারা হুমকি দেন- অফিস চলতে দেবেন না, অফিস বন্ধ করে রাখবেন। ৫ আগস্ট কিন্তু আপনাদের এই হিম্মতটা ছিল না।”

তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আপনারা কিন্তু তখন কেউ পদত্যাগ করেননি।”

এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের যদি অসহায়-দুর্ভোগের রেজিমেন্ট হিসেবে পরিচিত হয়, সেটা হচ্ছে সচিবালয় এবং দুর্নীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে যদি পরিচিত হয়, সেটা হচ্ছে এনবিআর।”

তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আপনারা যদি জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এই সরকারকে হুমকি-ধামকি দেন যে, সরকার সংস্কার কার্যক্রম করলে তাহলে সেটিকে বাধা দিবেন, আপনারা মনে রাখবেন এই জনগণ আপনাদের বিকল্প খুঁজে নিবে।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “৫ আগস্ট পর্যন্ত কোনো মন্ত্রণালয়ের কোনো সচিব, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কি পদত্যাগ করেছিল? সন্তানদের, সাধারণ নাগরিকদের যে এভাবে রাস্তার মধ্যে গুলি করে হত্যা করছিল, একজন সচিব, একজন আমলা, একজন সরকারি চাকরিজীবীর কি পদত্যাগের খবর এসেছিল?”

হাসনাত আবদুল্লাহ সরকারি কর্মচারীদের সরকারের কাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সরকারকে সহযোগিতা করুন, সংস্কার কার্যক্রমকে সহযোগিতা করুন। আপনাদের যদি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে কোনো পর্যালোচনা থাকে, কোনো মন্তব্য থাকে সেটা নিজেরা আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করুন।”

তিনি হুঁশিয়ার করেন, “কিন্তু সরকারকে যদি জিম্মি করেন, সেটার পরিস্থিতি ভালো হবে না। কারণ আপনাদের এই হিম্মত ছিল না, ফ্যাসিবাদ সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার।”

এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারির প্রস্তাবে সায় দেয়। এর প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আপত্তির মধ্যেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রোববার রাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সোমবারও সচিবালয়ে কর্মচারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে, গত ১২ মে রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারির পরদিন থেকে তা বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন সংস্থাটির কর্মীরা। সরকার দাবি মানার আশ্বাস দিলে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রোববার রাতে কর্মবিরতিসহ সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। তবে চেয়ারম্যানকে অপসারণের জন্য তিন দিন সময় বেঁধে দিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here