ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত: রাষ্ট্রদূত ইমরান

0
60

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সামরিক জান্তা কর্তৃক সংঘটিত বর্বরোচিত গণহত্যাকে স্মরণ করে আজ (সোমবার) ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় “গণহত্যা দিবস” পালিত হয়েছে ।
১৯৭১ সালের ঐদিন কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে দূতাবাস বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করে। দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
পরে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শাহেদুল ইসলাম ও মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মোঃ রাশেদুজ্জামান।
এরপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও নৃশংসতার ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ‘একাত্তরের গণহত্যা’ শীর্ষক সেমিনারের ওপর আলোচনায় অংশ নেন এবং কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) আরিফা রহমান রুমা এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহিদের মহান আত্মত্যাগ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতাকে মানব ইতিহাসের অন্যতম জঘন্যতম গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সামরিক জান্তা মুক্তিপাগল বাঙালিদের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণকে প্রতিহত করার নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্য ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে বর্বরোচিত গণহত্যা এবং ধ্বংসলীলা চালায়।
রাষ্ট্রদূত ইমরান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে ঐদিনে এবং পরবর্তী নয় মাসে নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংসতার বিষয়টি বিশ্ব স¤প্রদায়ের সামনে তুলে ধরার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সকলের প্রতি আহবান জানান ।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বর্বরোচিত গণহত্যার পর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আরিফা রহমান রুমা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ও পরবর্তী নয় মাসে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তা কর্তৃক সংঘটিত বর্বরোচিত গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তিনি পাক হানাদার বাহিনীর এই নিষ্ঠুর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচী শেষ হয়। কর্মসূচী পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট ও ভিসা উইং) মুহাম্মদ আব্দুল হাই মিলটন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here