top-ad
২৬শে জুলাই, ২০২৪, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১
banner
২৬শে জুলাই, ২০২৪
১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১

তামিমের অবসর নিয়ে মুখ খুললেন মাশরাফি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন তামিম ইকবাল। অবসর ঘোষণার পর এ বিষয়ে এক এক করে কথা বলছেন বিভিন্ন ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তা, সাবেক ক্রিকেটার, ক্রীড়া বিশ্লেষকরা। এবার তামিমের অবদান ও স্মৃতি তুলে ধরে কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তামিমের অবসর নিয়ে একটা পোস্ট করেন মাশরাফি।

মাশরাফির ওই পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘তামিম, তোর সিদ্ধান্ত অবশ্যই একান্তই তোর। এটা কারও ভালো লাগলেও তোর, ভালো না লাগলেও তোর। পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথাই হবে। তবে সবচেয়ে ভালো কোনটা, সেটা তুই ছাড়া কেউই ভালো বুঝবে না। তাই তোর এই সিদ্ধান্তকে আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ সম্মান জানাই।

তবে কিছু কথা জানতে মন চায়, মাত্র ৩৪ বছর ১০৮ দিনেই বিদায় কেন! আসলেই কি চালিয়ে যেতে পারছিস না? না কি কোনও চাপ তোকে বাধ্য করেছে! তোর অনেক ভক্ত হয়তো খুঁজে ফিরবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। আজ খুঁজবে, এমনকি ভবিষ্যতও আরও অনেকদিন খুঁজবে।

তোকে প্রথম দেখেছি চট্টগ্রামে তোদের বাসায়, হাফ প্যান্ট পরে খেলছিলি। তোর ভাই, আমার বন্ধু নাফিস ইকবাল তোকে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। পরের বার দেখলাম জাতীয় লীগে ওপেন করতে, খুলনার মাঠে। তারপর ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে একসঙ্গে পথ চলতে চলতে তুই হয়ে গেলি বন্ধুর মতো। কত দিন কত রাত এক সঙ্গে সময় কাটিয়েছি, একসঙ্গে খেতে যাওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা, দুষ্টুমি, মজা, তর্ক, খেলা নিয়ে কত কত আলোচনা করেছি, সেসবের কোনও হদিস নেই।

যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলাম, তখন তুই ছিল আমার অন্যতম ‘স্নাইপার।’ সেটা তুই নিজেও খুব ভালো করেই জানিস। যেদিন দল থেকে বের হয়ে এলাম, সেদিন তুই আমাকে কাঁধে তুলে নিয়েছিলি। পরে সারারাত একসঙ্গে আড্ডা দিয়েছিলাম। যে কোনও সিরিজ বা সফরে তুই ছিলি আমার রুমে আড্ডার অবধারিত সঙ্গী। আরও কত শত স্মৃতি এখন মনে পড়ছে!

তোকে যতটুকু চিনি, তাতে তোর এই সিদ্ধান্তকে আমি অনায়াসে পোস্টমর্টেম করতে পারতাম। কিন্তু তা করব না, কারণ ওই যে, তোর নিজস্ব সিদ্ধান্তকে অবশ্যই সম্মান জানানো উচিত। তোর মানসিক অবস্থা আমি বুঝতে পারছি, সেই সঙ্গে এটাও বলছি যে, তুই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে যা কিছু দিয়েছিস, তা আমরা আজীবন মনে রাখব। একজন তামিম হয়ে উঠতে কতটা পরিশ্রম, কতটা সময়, কতটা মেধা আর কত ত্যাগ থাকতে হয়, তা সময় সব কিছু বুঝিয়ে দেবে।

তোর প্রতি রইল অফুরন্ত ভালোবাসা। পরবর্তী জীবন পরিবার নিয়ে দারুণ কাটাবি, সেই আশাই করছি।
আর একটা কথা, দলের ভেতর নানা পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষণ নির্ভর আলোচনা এখন কে করবে, ঠিক জানি না। হয়তো কেউ করবে। তবে তুই এই জায়গায় সবসময়ই থাকবি সেরাদের সেরা।
গুড বাই মি. তামিম ইকবাল খান। একজন কিংবদন্তির বিদায়।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য শুভ কামনা, এগিয়ে চলুক দুর্বার গতিতে। আমাদের এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।’

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনি বলেছেন, ‘আজ এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি।’

দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার তামিম ইকবালের। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তিনি। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি। টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে তার সংগ্রহ ৫১৩৪ রান। ৩১ ফিফটির সঙ্গে করেছেন ১০ সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টিতে ৭৮ ম্যাচে করেছেন ১৭৫৮ রান। দেশের একমাত্র সেঞ্চুরির সাথে আছে ৭টি ফিফটিও।

আরো খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয় খবর